রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দু’জনের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে দুইজনের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রবিবার (৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় উখিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহ শুনানী শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুরের আদেশ দিয়েছেন। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় তাদের দুজনকে আদালতে উপস্থাপন করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল।
কক্সবাজার আদালত পুলিশের পরিদর্শক চন্দন কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রিমান্ড আদেশ পাওয়া আসামীরা হলেন, কুতুপালং ক্যাম্পের সি-ব্লকের বাসিন্দা নুর বশরের ছেলে সেলিম উল্লাহ ওরফে লম্বা সেলিম (২৭) ও মধুরছড়া ৩ নম্বর ক্যাম্পের ডি-১৫ ব্লকের রহিম উল্লাহর ছেলে শওকত উল্লাহ (২৫)।
কক্সবাজার কোর্ট ওসি চন্দন কুমার সরকার বলেন, রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শনিবার ভোররাতে এবং শুক্রবার সকাল ও দুপুরে উখিয়া থানা পুলিশ এবং ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ান পুলিশ (এপিবিএন) অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে। এদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শওকত উল্লাহ ও লম্বা সেলিমকে শনিবার বিকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এসময় তাদের আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক শুনানীর জন্য রবিবার দিন ধার্য করেছিল। সেই মতে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুনানি শেষে আদালত দুজনকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে, শনিবার ভোররাতে ১৪ এপিবিএন এর সদস্যরা বিভিন্ন ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আব্দুস সালাম (৩২) ও জিয়াউর রহমান (৩০) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তাদের মধ্যে আব্দুস সালামকে লম্বাশিয়া ১-ইস্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এবং জিয়াউর রহমানকে কুতুপালং ৮-ইস্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর রবিবার তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এ নিয়ে রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কার্তিক চন্দ্র পাল।
উল্লেখ্য, মাস্টার মুহিবুল্লাহ (৫০) আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস নামে একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত বুধবার রাতে কুতুপালং ক্যাম্পের লম্বাশিয়ায় তাকে গুলি করে হত্যা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর এলাকার স্কুলশিক্ষক মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার, নিরাপদে দেশে প্রত্যাবাসন ও তাদের মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম তাকে 'রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর' হিসেবেও আখ্যায়িত করে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট ১ নম্বর ব্লকের বাড়ির সামনে অফিসে বসা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামী করে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ।