রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার আসামির কারাগারে মৃত্যু
চট্টগ্রামের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মৌলভী জকোরিয়া (৫৩) কারাগারে বন্দি অবস্থায় মারা গেছেন।
শনিবার রাতে চট্টগ্রাম কারাগারের ডেপুটি জেলার মনির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত মৌলভী জকোরিয়া উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১-ইস্ট, ব্লক ডি/৮-এর বাসিন্দা মৃত আব্দুল করিমের ছেলে (এফসিএন নম্বর ১৪৭৯৬৭)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।
চট্টগ্রাম কারাগারের ডেপুটি জেলার মনির হোসেন জানান, শুক্রবার মধ্যরাতে কারাগারে প্রাথমিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তাকে কয়েক দিন আগে চট্টগ্রাম কারাগারে আনা হয়।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ায় লাম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদল দুর্বৃত্তরা আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের সপ্তাহ খানেক আগে আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মুহিবুল্লাহকে পৃথিবীকে সরিয়ে দেয়ার ফতোয়া দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান মৌলিভী জকোরিয়া। চলতি বছর ৫ মার্চ মহিবুল্লাহকে হত্যার ফতোয়া দেয়ার অভিযোগে উখিয়ার লম্বাশিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল ১৪ এপিবিএন।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্থিরতা তৈরির মদদদাতাদের একজন শীর্ষ পরামর্শক হিসেবে জকোরিয়াকে বিবেচনা করা হয়।
এদিকে গত ১১ সেপ্টেম্বর মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার আসামিদের বিচার শুরু হয়েছে। এর আগে ১৩ জুন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
মুহিবুল্লাহ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান ছিলেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বড় ভূমিকা ছিল তার। ঘটনার পর ১৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার মধ্য থেকে ছয় জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। সাড়ে আট মাস তদন্তের পর ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট আদালতের ডকেট শাখায় জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাউদ্দিন।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ায় লাম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদল দুর্বৃত্তরা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এরপর তার ভাই হাবিবুল্লাহ অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তিনি হামলাকারী কয়েকজনকে চেনার কথা সাংবাদিকদের জানালেও সে সময় মামলায় আসামির তালিকায় কারও নাম দেয়া হয়নি।
মুহিবুল্লাহকে হত্যার ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। জাতিসংঘ, ইউএনএইচসিআর, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।