ভারতে পাচারের শঙ্কায় জ্বালানী তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে: নসরুল হামিদ
জ্বালানী তেলের দাম বাড়ানোয় সংসদে বিরোধী এমপিদের সমালোচনার মুখে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও প্রতিবেশী ভারতে পাচার হওয়ার আশঙ্কায় জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হয়েছে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে কার্যপ্রণালি ১৪৭ বিধির আওতায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর আনা সাধারণ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব বলেন।
এইদিন মুজিবুল হক চুন্নু বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ সাম্প্রতিক সমস্যায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ জাতিকে জানাতে এই প্রস্তাব আনেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, "২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে হঠাৎ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ যখন শুরু হলো, ১৭০ ডলার হয়েছিল জ্বালানি তেলের দাম। সেই সময় বাড়ালে পার লিটার ৬০ টাকা করে বাড়াতে হতো। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম দামটা একটু কমুক। তখন অ্যাডজাস্টমেন্টে যাবো। দাম আস্তে আস্তে কমে ১৩৯ ডলার যখন হয়েছে, ভারতের থেকে তখনও আমাদের ৪০ টাকা লিটারপ্রতি পার্থক্য ছিল। যার কারণে আশঙ্কা ছিল ভারতে তেল পাচার হয়ে যাওয়ার। সেই কারণে আমাদের একটি ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। বৈশ্বিক অবস্থা, তেলের ঘাটতি, ঊর্ধ্বমুখী তেলের দাম এবং পাচার হওয়ার ঘটনা অনেক কিছু মিলিয়ে এই দাম আমাদের সমন্বয় করতে হয়েছে। আমরা তো দাম বৃদ্ধি করিনি। আমরা সমন্বয় করেছি।"
বিরোধী দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, "তারা উটপাখির মতো মাথাটা বালুর নিচে দিয়ে রাখতে চান। বিশ্বে কী ঘটনা ঘটছে কিছুই তাদের আসে যায় না…৪৮ হাজার কোটি টাকা বিপিসি লাভ করেছে। আপনারা কী চান সরকারি সংস্থা দেউলিয়া হয়ে যাক। ৪৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৪৫ হাজার কোটি টাকা সরকারকে দেওয়া হয়েছে দেশ পরিচালনা করার জন্য।"
বিরোধীদের ক্যাপাসিটি চার্জের সমালোচনার উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, "রেন্টাল পাওয়ার বলতে কিছু নেই। আমাদের স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল। স্বল্প মেয়াদের পরিকল্পনায় ছিল ইমিডিয়েট কয়েক মাসের মধ্যে কীভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যায়। সেজন্য আমরা ভাড়া করে নিয়ে আসছিলাম। ইংরেজিতে সেটাকে বলে রেন্টাল পাওয়ার। একটাও পাওয়ারপ্ল্যান্ট তো এখন রেন্টাল না। একটারও কোনও ক্যাপাসিটি চার্জ নেই।"
"সারা বিশ্বে আপনি কোনও পাওয়ারপ্ল্যান্ট করতে পারবেন না, যদি ক্যাপাসিটি চার্জ না দেন। একটি পাওয়ারপ্ল্যান্ট ১০-২০ বছরের জন্য নেবেন- তার প্রতিদিন যে অর্থ খরচ হবে তা দেবেন না? আপনি বলবেন আমি যখন ইচ্ছে তখন চালাবো। পৃথিবীর কেউ আপনার কাছে ইনভেস্টমেন্ট করবে?"
"জাতীয় পার্টির ক্ষমতায় থাকতে বিদ্যুতের সিস্টেম লস ছিল ৪৪ শতাংশ। বিএনপির সময়ে ছিল ২২ শতাংশ। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, সিস্টেম লস ৭ শতাংশ। বিশ্বের সবচেয়ে স্ট্যান্ডার্ড সিস্টেম লস হচ্ছে ৭.৬ শতাংশ।"
নসরুল হামিদ আরও বলেন, "২০০৯ সালে এক কোটি গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ ছিল, এখন সাড়ে চার কোটি গ্রাহকের কাছে। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে এখন বিদ্যুৎ সংযোগ আছে। …সাড়ে ৫ লাখ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন হয়েছে।"