মেট্রো রেল ডিপো ও বিভাজকে সবুজায়নের পরিকল্পনা
আধুনিক যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে পরিবেশের সম্পর্ক নিরূপণ করাটা কঠিন।
তবে মেট্রো রেল ডিপো ও উড়াল রেলপথের নিচে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা ঢাকাকে বাসযোগ্য এক সবুজ শহরে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
উত্তরার দিয়াবাড়ি মেট্রোরেল ডিপোতে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার গাছ রোপণ করেছে মেট্রোলেন নির্মাণ ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। উড়াল মেট্রোপথের নিচে সড়ক বিভাজকে ফুল ও বিভিন্ন সৌন্দর্য বর্ধনকারী গাছ লাগানোর পরিকল্পনাও নিয়েছে তারা।
ডিএমটিসিএল কর্মকর্তাদের মতে, মেট্রো রেল ডিপো ঘন সন্নিবিষ্ট ও একেকটি ডিপোতে প্রায় ৫২টি অবকাঠামো থাকে। তবে ডিপোর ভিতর ও সংলগ্ন এলাকায় কিছু খোলা জায়গা রয়েছে।
দিয়াবাড়ি ডিপোতে খোলা জায়গায় এখন ৪২০টি দেবদারু, ৫৬টি সোনালু, ৬০টি বকুল এবং ৫৪টি পাম গাছসহ স্থানীয় অনেক প্রজাতির গাছ রয়েছে। ডিপোতে ফুল ও লতানো গাছও রয়েছে। ডিপো এলাকায় ৫০টি ড্রাগন ফল, ১৫টি আম ও ২০টি কাঁঠাল গাছসহ ফল গাছও রোপণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
দিয়াবাড়ির মতোই সবগুলো মেট্রোরেল ডিপো বিভিন্ন গাছ রোপণের মাধ্যমে সবুজায়নের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে তারা। কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তরা-আগারগাঁও এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে সড়ক বিভাজকে ফুলের গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করছেন তারা।
ডিএমটিসিএল-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর এমএএন সিদ্দিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'নির্মাণকাজ শেষে যেটুকু জমি অবশিষ্ট থাকবে আমরা সেখানে উপযুক্ত প্রজাতির গাছ লাগাব।'
উদাহরণস্বরূপ, তিনি সড়ক বিভাজকে আলঙ্কারিক লতা, ঝোপসহ এমন সব গাছ রোপনের পরিকল্পনার কথা জানান যেগুলোর জন্য খুব বেশি সূর্যালোক ও যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ঝোপগুলো পথচারীদের অবাধ চলাফেরা ও দখলদারদেরও রোধ করবে।
'সড়ক বিভাজকগুলো পড়ে থাকলে হয় আবর্জনা ফেলার জায়গায় পরিণত হবে নয়তো দখল হয়ে যাবে,' বলেন তিনি।
'আমরা ডিসেম্বরের শুরুতে আগারগাঁও থেকে উত্তরা ডিপো পর্যন্ত সড়ক বিভাজকে কিছু মৌসুমী ফুলের গাছ লাগাব,' বলেন তিনি। পরীক্ষা্মূলক কার্যক্রম সফল হলে পুরো মেট্রোরেল করিডোর সবুজায়নের আওতায় আনা হবে।
ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা জানান, রেলপথের নিচে গাছ লাগানো দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে। প্রথমত গাছগুলো ছোটখাটো হবে ও দ্বিতীয়ত এগুলো শহরের রাস্তার সৌন্দর্য বর্ধন করবে।
এমএএন সিদ্দিক বলেন, বাগান করার ন্য উপযুক্ত দোআঁশ মাটি বিভাজকে জমা করা হয়েছে। তাছাড়া নিচে পাকা করা নেই। ফলে গাছের শিকড় মাটির গভীরে পৌঁছাতে পারবে।
বৃক্ষরোপণের পরে সামান্য কিছু যত্ন নেওয়া হলেই গাছগুলো কমপক্ষে চার বছর বেঁচে থাকবে বলে আশা করেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
'আপনি জ্যামে আটকে গেলেও সবুজ ও ফুলেল রাস্তা দেখে মন সতেজ থাকবে,' বলেন তিনি।