ই-জিপিতে সাড়ে ৬ লাখ টেন্ডার আহ্বান, বছরে সাশ্রয় ৬০০ মিলিয়ন ডলার
২০১১ সালে অনলাইনে সরকারি কেনাকাটা (ই-জিপি) চালু হওয়ার পর এ পর্যন্ত এ ব্যবস্থায় সাড়ে ছয় লাখ দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর ফলে বছরে ৬০০ মিলিয়ন বা ৬০ কোটি ডলার সাশ্রয় হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ-এর আওতাধীন সংস্থা সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)।
সংস্থাটির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিমিনময় সভায় সিপিটিইউ-এর মহাপরিচালক মো: শোহেলের রহমান চৌধুরী জানান, অনলাইনে দরপত্র আহ্বান করায় ক্রয় প্রক্রিয়াকরণের গড় সময় ৮৬.৭ দিন থেকে ৫৮ দিনে নেমে এসেছে। এর ফলে ১০৫.৩ কোটি পাতা কাগজের সাশ্রয় হয়েছে।
একই সঙ্গে দরদাতাদের ৪৯.৭ কোটি কিলোমিটার দূরত্ব কম ভ্রমণ করতে হয়েছে। এর ফলে কার্বন নিঃসরণ কমেছে ১৫৩,৫৫৯ টন।
অনুষ্ঠানে তিনি আরও জানান, দরপত্র প্রক্রিয়াকরণসহ বিভিন্ন খাতে ৪০০-৪৫০ কোটি টাকা আয় করছে সিপিটিইউ। এ পর্যন্ত সংস্থাটি সরকারের তহবিলে ১,৯৬১ কোটি টাকার বেশি জমা দিয়েছে।
মতবিনিময় সভায় বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) বিদায়ী সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, ইজিপি নিয়ে অনেক কাজ হওয়ায় সরকারি কেনাকাটায় অনেক পরিবর্তনও এসেছে। এই কাজে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া সংস্থা বিশ্বব্যাংক এই ব্যবস্থাটির প্রশংসা করছে। বিভিন্ন দেশকে তারা পরামর্শ দিচ্ছে বাংলাদেশের ই-জিপি কার্যক্রম অনুসরণ করার জন্য।
অনলাইন কেনাকাটার সুবাদে পুরো প্রক্রিয়াটিই এখন কাগজবিহীন হয়েছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনায় বড় অংশীদারত্ব সিপিটিইউ-র। ইতোমধ্যে আইএসও সনদ ও ডিরেক্টর অ্যাওয়ার্ড এর মতো বড় অর্জন রয়েছে।
সিপিটিইউ-এর মহাপরিচালক শোহেলের চৌধুরী বলেন, বর্তমানে ই-জিপি সিস্টেমের মাধ্যমে আহবানকৃত দরপত্রের বিজ্ঞাপন ও চুক্তির শতভাগ প্রকাশিত হচ্ছে। দরপত্রের ৯৯ শতাংশের ক্ষেত্রে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হচ্ছে।
এ সময় তিনি আরও জানান, নিবন্ধিত দরদাতার সংখ্যাও এক লাখের বেশি। ৫৯টি ব্যাংকের সাড়ে ছয় হাজারের বেশি শাখা সারাদেশে দরদাতাদের পেমেন্ট সেবা দিচ্ছে। অনলাইনেও পেমেন্ট চলছে। বিশ্বব্যাপী কোডিভ পরিস্থিতিতেও ই-জিপি একদিনের জন্য বন্ধ হয়নি।
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কাজের বাস্তবায়ন মান সম্মত হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে স্থানীয় নাগরিকদের মাধ্যমে ক্রয়কাজের পরিবীক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৪৮ উপজেলায় ৩১৬টি চুক্তি বা কাজ পরিবীক্ষণ করেছেন স্থানীয়রা।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনের উল্লেখ করা তিনি বলেন, ইজিপি চালুর পর ক্রয় প্রক্রিয়াকরণের গড় সময় কমেছে। কাগজের ব্যবহার ও ভ্রমণের পরিমাণ কমে আসায় তা পরিবেশবান্ধব হয়েছে বলেও তিনি জানান।
অনলাইনে কেনোকাটা ব্যবস্থায়ও ঠিকাদারদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘোষ প্রদানের অভিযোগ তোলা হয়েছিল বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটিতে।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আবু হেনা মোরশেদ জামান জানান, সরকারি কেনাকাটায় আধুনিকায়নে্র একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করে সরকারি কেনাকাটা সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটিতে উপস্থাপনের পর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হয়েছে।