চবি চারুকলা ইন্সটিটিউট ও চমেকের দুই হল বন্ধ ঘোষণা, পুলিশি অভিযান
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরণ অনশনের হুমকির মুখে চবি চারুকলা ইন্সটিটিউট এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইন্সটিটিউট সংস্কারের কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় শিক্ষার্থীদের রাত ১০টার মধ্যে ক্যাম্পাস ও হোস্টেল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়।
অন্যদিকে মেস পরিচালনা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) লুৎফুস সালাম ও হাফিজুল্লাহ বশির ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে নগরের শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। বিবদমান পক্ষ দুই হলে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
টিবিএসের চবি প্রতিনিধি জানান, মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার দাবিতে প্রায় দুইমাস ধরে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। গতকাল আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনের ঘোষণা দিলে ইন্সটিটিউট এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভায় শিক্ষার্থীদের বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে ক্যাম্পাস-হোস্টেল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়। আগামী একমাস স্বশরীরে ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও অনলাইনে ক্লাস চলবে বলে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, চারুকলা ইন্সটিটিউট একমাস বন্ধ থাকবে। এসময় অনলাইনে ক্লাস নিবেন শিক্ষকরা।
এদিকে ইন্সটিটিউট বন্ধ ঘোষণার রাতেই ক্যাম্পাসে অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হওয়া এ অভিযান চলে রাত প্রায় দুইটা পর্যন্ত।
জানা গেছে, রাত সাড়ে ১২টার সময় ইনস্টিটিউটের দুই পাশের ফটকের তালা ভেঙে পুলিশ সদস্যরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। পুলিশের সাথে চবির প্রক্টরিয়াল বডিও ছিলেন। তারা ইনস্টিটিউটের ভেতরে অবস্থিত শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলের বিভিন্ন কক্ষে ও শিক্ষক ক্লাবে তল্লাশি চালান।
এসময় আন্দোলনকারীদের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, চলমান আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দুর্বল করতে অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।
চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা ২২ দফা দাবিতে গত বছরের ২ নভেম্বর ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। শুরুতে তাদের আন্দোলন ইনস্টিটিউটের সংস্কার কেন্দ্রিক থাকলেও পরবর্তীতে তা ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের একদফা দাবিতে রূপ নেয়। লাগাতার আন্দোলনের একপর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রীর আহ্বানে শর্তসাপেক্ষে গত ২৩ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরলেও সপ্তাহের মাথায় গত সোমবার আবারো ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে যান শিক্ষার্থীদের একাংশ।
এদিকে, খাবারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে বৃহস্পতিবার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) লুৎফুস সালাম ও হাফিজুল্লাহ বশির ছাত্রাবাস। একইসঙ্গে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। চমেকের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ছাত্রদের দুই পক্ষের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধে হোস্টেল দুটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।