রাসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে লড়তে আগ্রহী বিএনপি সমর্থক কাউন্সিলররা
২০১৮ সালের রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের ২১টিতেই জিতেছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলররা। বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা জেতেন ছয়টিতে। এর বাইরে কোনো দলের সমর্থন না নিয়ে জিতেছেন দুজন কাউন্সিলর। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী জয়ী হন একটি ওয়ার্ডে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ শহরের উপকণ্ঠের অন্তত নয়-দশটি ওয়ার্ডে একসময় জামায়াতে ইসলামীর একচ্ছত্র আধিপত্য থাকলেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই দলের একজন প্রার্থীও জিততে পারেননি। কাউন্সিলর পদে দলটি অঘোষিতভাবে ১৩টি ওয়ার্ডে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছিল। তবে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের একটিতে জামায়াত-সমর্থিত প্রার্থী সুলতানা রাজিয়া জয়লাভ করেন।
সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর সুলতানা রাজিয়া জানান, তিনি এবারও ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেবেন।
বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে কামাল হোসেন (৩ নম্বর ওয়ার্ড); রেজাউন নবী (৯ নম্বর), আবদুস সোবহান (১৫ নম্বর); বেলাল আহমেদ (১৬ নম্বর); আনোয়ারুল আমিন (২৭ নম্বর) ও আশরাফুল হাসান (২৮ নম্বর)। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচনে আ. লীগের প্রার্থী রাসেল জামান জয় পান।
এদের মধ্যে রেজাউন নবী মারা গেলে, ২০২১ সালের উপ-নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রাথী। আর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর আশরাফুল হাসান জানান, তিনি ২০১৩ সাল থেকে কাউন্সিলর পদে ভোট করে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তিনিও এবার ভোট করবেন।
তবে কামাল হোসেন ও আব্দুস সোবহান বিএনপি সমর্থনের কথা অস্বীকার করেছেন।
তারা বলছেন, তারা দলীয়ভাবে নির্বাচিত না। জনগণ কথা ভেবে তারা নির্বাচনে দাঁড়ান। আগামী নির্বাচনেও জনগণের কথা ভেবেই নির্বাচনে দাঁড়াবেন। গত নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির বেশিরভাগই পূরণ করেছেন বলে দাবি তাদের দু'জনার। এদের মধ্যে কামাল হোসেন নিজেকে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান বলে দাবি করেন। তবে বেলাল আহমেদ ও আনোয়ারুল আমিন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ভোট করে জয়লাভ করেছেন বলে জানান। এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে এবারও নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলে তারা জানিয়েছেন।
বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর বেলাল আহমেদ জানান, আমি ২০০২ সাল থেকে সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ভোট করে জয়লাভ করে জনগণের সেবা করে আসছি। আগামী নির্বাচনেও কাউন্সিলর পদে ভোট করতে চাই। তিনি বলেন, 'আমি আগে শাহমখদুম থানা যুবদলের সভাপতি ছিলাম। এখন আর কোনো পদপদবিতে নেই। আর দলে সেভাবে সক্রিয়ও না। তাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। তবে বিএনপি সমর্থন করি। আর কাউন্সিলর পদে তো দলীয় মনোনয়নের বিষয় নেই। এপর্যন্ত আমাদের কাউকে বিএনপি থেকে তো বাধা দেওয়া হয়নি'।
আনোয়ারুল আমিনও বিএনপি থেকে সমর্থন নিয়ে ২০০২ সাল থেকে সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করে আসছেন। তিনি বলেন, '২০ থেকে ২২ বছর আগে বিএনপির পদে ছিলাম। এখন কোনো পদে নেই। তবে বিএনপি করি। আর কাউন্সিলর পদে তো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় না। শুধু মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়। তাই এবারও কাউন্সিলর পদে ভোট করতে চাই'।
এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, 'বিএনপির পদ-পদবিতে যারা আছেন তাদের কেউ নির্বাচনে যাবে না। বিএনপির কাউন্সিলর হিসেবে যারা নির্বাচিত হয়ে আছেন তাদেরও বলা হবে নির্বাচনে না যেতে। আমাদের একটাই দাবি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাব না'।
গতবার নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল-ও বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে উল্লেখ করেন।