ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' আঘাত হানতে পারে ১২ বা ১৩ মে
মার্কিন এবং ইউরোপীয় আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলোর তথ্য অনুসারে, আগামী ১২ থেকে ১৩ মে'র মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কানাডার সাসকাচোয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
তিনি বলেন, ইউরোপিয়ান মডেল অনুসারে, সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের ওপর দিয়ে এবং আমেরিকার মডেল অনুসারে, উত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভোলা জেলার উপকূল দিয়ে স্থাল ভাগে আঘাত হানতে পারে।
ইউরোপিয়ান মডেলের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ১২ মে দুপুর ১২ টার পর থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলের ওপর দিয়ে ঝড়টি অতিক্রম করবে। অন্যদিকে আমেরিকান মডলে অনুসারে, ১৩ মে দুপুর ১২ টার পর থেকে উত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভোলা জেলার উপকূল দিয়ে স্থাল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অফিসও জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আগামী সপ্তাহে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যা পরে শক্তি সঞ্চয় করে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে 'মোখা'। নামটি দিয়েছে ইয়েমেন। এক সময় মোখা ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রধান বন্দর ছিল। স্থানটি কফির জন্য বিখ্যাত। কালক্রমে এখানকার কফির নাম হয়েছে মোখা কফি। সেখান থেকেই ইয়েমেন ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে 'মোখা'।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এরমধ্যে একটি চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতের বিশেষায়িত আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র (আরএসএমসি) জানিয়েছে, আগামী ৬ মে'র দিকে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। এটি ঘণীভূত হয়ে ৯ মে'র দিকে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আন্দামান দ্বীপের কাছে ১০ মে'র দিকে গভীর নিম্নচাপ এবং ১১মে'র দিকে রূপ নিতে পারে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে।
এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে জানিয়েছে, মে মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এক থেকে তিন দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি/তীব্র কালবৈশাখী ঝড় এবং তিন থেকে পাঁচ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা/মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।
চলতি মাসে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলাসিয়াসের বেশি) এবং দেশের অন্যত্র এক থেকে দুটি মৃদু (৩৬-৩৮সেলসিয়াস)/ মাঝারি (৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।