প্রকাশিত সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নিতে নাদিমকে হত্যা করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান: র্যাব
ঘটনার তিন দিন পর শনিবার সকালে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি জামালপুরের সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বাবু ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন আজ গণমাধ্যমকে জানান, র্যাব-১৪-র একটি দল সকাল ৭টার দিকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা চর তিস্তাপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন: রেজাউল, মনির ও জাকির।
র্যাব বলেছে, বাবুর চক্রের অন্য সদস্যদের সঙ্গে এই তিনজন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, 'সাংবাদিকরা মাঝে মাঝে তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য আক্রমণের শিকার হন। সন্ত্রাস ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাংবাদিকরা আমাদের [র্যাবের] বন্ধু। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এবং সাংবাদিকরা যখন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হন, আমরা সবসময় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার চেষ্টা করি।'
খন্দকার আল মঈন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাবুর অপকর্ম নিয়ে অনলাইন পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন নাদিম। এতে নাদিমের প্রতি ক্ষোভ জন্মায় চেয়ারম্যান বাবুর। তাই তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য হত্যার পরিকল্পনা করেন চেয়ারম্যান। বাবু পরিকল্পনা করেন এবং হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
এছাড়া নাদিমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাও দায়ের করছিলেন বাবু। পরবর্তীতে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন।
র্যাব পরিচালক বলেন, যেদিন নাদিমের বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা খারিজ হয়, সেদিনই বিষয়টি নিয়ে নাদিম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে বাবু আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক নাদিমকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তিনি নির্দেশ দিয়ে পর্দার আড়াল থেকে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেন। তার চক্রের সদস্য মনিরুল এবং জাকিরও আগেও অন্যান্য মামলায় আসামি চ্চিলেন।
হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে বাবু পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেন। তিনি মোবাইল ফোন রেখে যাওয়ায় তার অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না।
মামলার অপর আসামি, বাবুর ছেলে ফাহিম রহমান ওরফে রিফাত এখনও পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
হত্যার কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে এ বিষয়ে সহায়তা চাইলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন সাংবাদিক নাদিমের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে জানতে চাইলে র্যাব পরিচালক বলেন, তিনি এ ধরনের কোনো লিখিত অনুরোধ পাননি।
খন্দকার আল মঈন বলেন, 'তিনি সংশ্লিষ্ট থানায় কোনো অভিযোগ করেছিলেন কি না, তা আমরা জানি না। যদি করে থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই আইনি সহায়তা পাবেন।'