'যৌক্তিকতা ছাড়াই' ইসরায়েলি বাহিনী শিরিন আবু আকলেহকে হত্যা করে: জাতিসংঘের তদন্ত
কোনো রকম 'জাস্টিফিকেশন' বা যৌক্তিকতা ছাড়াই প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে অধিকৃত পশ্চিমতীরে আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে গুলি করে ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘ-নির্দেশিত তদন্তকারী সংস্থার নতুন প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকোয়ারি সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে ন্যায্যতা ছাড়াই ইসরায়েলি বাহিনী 'লিথাল ফোর্স' ব্যবহার করে।
মার্কিন-ফিলিস্তিনি নাগরিক শিরিন ২০২২ সালের ১১ মে ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরে জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি সামরিক অভিযানের খবর সংগ্রহ করার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
কমিশনের চেয়ারম্যান নেভি পিলে বলেন, "জেনিনে শিরিন আবু আকলেহ'র হত্যা পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিমতীরে ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমের সরাসরি ফল।"
"ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ শক্তি প্রদর্শনের আরেকটি শিকার শিরিন আবু আকলেহ। এটি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করারও একটি আক্রমণ।"
জাতিসংঘের তদন্তকারী সংস্থাটি সুপারিশ করেছে, ইসরায়েলি সরকার যেন আবু আকলেহ'র হত্যাকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে। এছাড়াও ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সংগ্রহ করা প্রমাণ সরবরাহ করা হবে বলে জানায় তারা।
এই প্রতিবেদনের সময়কাল ২০২১ সালের মে থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত। প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে কীভাবে ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় বেসামরিক লোকজন সর্বোচ্চ মূল্য পরিশোধ করছ; হতাহত এড়াতে ইসরায়েলি বাহিনী বা সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী কেউই উদ্যোগ নিচ্ছে না।
তবে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যকার চলমান সংঘাতের তথ্য যোগ করেনি প্রতিবেদনটি। আগামী ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে।
নেভি পিলেই বলেন, "আমাদের প্রতিবেদনটি বেদনাদায়ক এবং সময়োপযোগী। এখানে জোর দেয়া হয়েছে যে, সহিংসতার অবসান এবং টেকসই শান্তি অর্জনের একমাত্র উপায় অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং ইসরায়েল জুড়ে আন্তর্জাতিক আইন কঠোরভাবে পালন। আর এর জন্য প্রয়োজন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দখলসহ সংঘাতের মূল কারণগুলোর সমাধান এবং ফিলিস্তিনিদের তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রয়োগের অনুমতি প্রদান।"