চট্টগ্রামে সংঘর্ষ: তিন মামলায় আসামি জামায়াত-শিবিরের ৪০০ নেতাকর্মী
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে সংর্ঘষের ঘটনায় ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩৫৫ জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ আগস্ট) নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলা দুটি দায়ের করেছ পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, গতকাল জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদ থেকে আলমাস মোড়ে অবস্থান নিয়ে জামায়াত-শিবিরের উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ সময় তাদের হামলায় পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হন।"
এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তারকৃত ৪০ জন এবং পলাতক ২৫ জনসহ অজ্ঞাত ২০০-২৫০ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানার দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নগরীর খুলশী থানায় আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে। খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, মামলায় ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
এরমধ্যে কক্সবাজারের চকরিয়ায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াতের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ফোরকান উদ্দিন (৫৬) নামে একজন নিহত হন।
অন্যদিকে, বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের সামনে জড়ো হতে থাকেন জামায়াত-শিবিরের নেতার্মীরা। অনুমতি না থাকায় মসজিদের দুইটি ফটকই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে প্রধান ফটকের সামনে তারা বিক্ষোভ শুরু করলে ধাওয়া দেয় পুলিশ।
এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। চলে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
গত রোববার বুকে ব্যথাজনিত সমস্যার কারণে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওইদিনই রাত ১০টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয় সাঈদীকে। সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে বিএসএমএমইউ-তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা যান।
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এর আগে, ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী। পরে একই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।