বাড়তি আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেটের সব বন্দর দিয়ে পাথর-চুনাপাথর আমদানি বন্ধ
শুল্ক কর ও আমদানি শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে সিলেট বিভাগের সব স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন আমদানিকারকেরা।
বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার (১৬ আগস্ট) থেকে তারা আমদানি বন্ধ রেখেছেন।
সিলেটের বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো দিয়ে মূলত বড় পাথর (বোল্ডার) ও চুনাপাথর আমদানি হয়। কয়েকটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হয়। ফলে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় অচল হয়ে পড়েছে স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তামাবিল স্থলবন্দরে সরেজমিনে গিয়ে নিত্যদিনকার ব্যস্ততা দেখা যায়নি। ভারত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে না আসায় স্থবির হয়ে আছে সিলেটের প্রধান এ স্থলবন্দর।
তামাবিল চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, 'জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানির ওপর অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু প্রতি মেট্রিক টনে দুই ডলার বৃদ্ধি করেছে। এ বাড়তি শুল্ক দিয়ে পণ্য আমদানি করতে হলে আমদানিকারকেরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই সিলেটের সবকটি বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনপাথর পাথর আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।'
শুল্ক বাড়ানো প্রসঙ্গে কয়েকদিন ধরেই স্থলবন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমদানিকারকদের বাদানুবাদ চলছে। ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন, কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তারা তাতে রাজি হননি। আলোচনায় সমাধান না হওয়ায় আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সুনামগঞ্জের ছাতক লাইমস্টোন ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি ও সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক সেলিম চৌধুরী বলেন, 'কাস্টমসের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে চুনাপাথরের ডিউটি (ইম্পোর্ট অ্যাসেসমেন্ট রেট) সাড়ে ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১৩ ডলার এবং বড় পাথরের (বোল্ডার) রেট ১১ ডলার বাড়িয়ে ১৩ ডলার করার কথা জানানো হয়েছে।'
ব্যবসার অবস্থা খারাপ দাবি করে তিনি বলেন, 'এ শুল্কবৃদ্ধির কারণে ট্রাকপ্রতি ব্যয় ১২ থেকে ১৩শ টাকা বেড়ে যাবে। বিষয়টির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য আমদানি বন্ধ থাকবে।'
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।
কাস্টমসের সিলেট অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার সোলাইমান হোসেন বলেন, 'শুল্ক আমরা বাড়াইনি। এনবিআর থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনাতেই অ্যাসেসম্যান্ট ভ্যালু বাড়ানো হয়েছে। তবে আমদানিকেরা চাইলে এ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।'
সিলেট বিভাগে তামাবিল স্থলবন্দর ছাড়া আরও ১২টি শুল্ক স্টেশন রয়েছে। এগুলো দিয়ে মূলত চুনাপাথর ও বোল্ডার আমদানি করা হয়।