মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট: ৭ মাসের শিশুটিকে রাস্তা থেকে তুলে হাসপাতালে নেন ২ হিজড়া
জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে পানি জমে ছিল। সে পানিতে বিদ্যুতের ছেঁড়া তার পড়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে গতকাল রাতে মা-বাবা আর বড় বোনকে হারিয়েছে একই দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা ৭ মাস বয়সী শিশুটি।
আমিনা ও বৃষ্টি নামক দুই হিজড়া আহত হোসাইনকে দুর্যোগের রাতে রাস্তা থেকে হাসপাতালে নিয়ে যান বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে প্রথম আলো।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রবল বৃষ্টিতে ঢাকার অনেক সড়ক ডুবে যায়। ফলে শহরজুড়ে সৃষ্টি হয় যানজট। ভয়াবহ পরিস্থিতিতে গভীর রাত পর্যন্ত সড়কে আটকা পড়েন যাত্রীরা।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মিজান হাওলাদার (৩৫) তার স্ত্রী মুক্তা (২৫), বড় মেয়ে লিমা (৭), ও শিশু হোসাইনকে নিয়ে রাত ৯টার দিকে মিরপুর কমার্স কলেজের কাছে ঝিলপাড় বস্তিতে তাদের বাসায় ফিরছিলেন। বস্তির উল্টোদিকে রাস্তার একটি অংশের কাছে গেলে হোসাইন ছাড়া বাকি সবাই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান।
এ পরিবারকে উদ্ধার করতে গিয়ে স্থানীয় যুবক মোহাম্মদ অনিকও (১৮) বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান।
পরে আমিনা ও বৃষ্টি আহত হোসাইনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বৃষ্টি বলেন, দুর্ঘটনার সময় তিনি এবং আমিনা দুজনেই বাসায় ছিলেন। হট্টগোল শুনে বেরিয়ে এসে মানুষ মারা যাওয়ার কথা শোনেন।
বাইরে রাস্তায় হোসাইনকে তারা পানিতে ভাসতে দেখেন। এরপর শিশুটিকে স্থানীয় এক বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছু নারী তার গায়ে তেল মালিশ করে গরম করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে শিশুটির নাক দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে। তখন সেখানে তার পরিবারের কোনো সদস্য না থাকায় আমিনা ও বৃষ্টি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
বৃষ্টি জানান, শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে তারা হোসাইনকে তার বাবা-মা'র প্রতিবেশীর হেফাজতে তুলে দিয়েছেন। এ হাসপাতালে হোসাইনের মা-বাবা ও বোনের লাশ রাখা হয়।
বরিশালের বাসিন্দা মিজান রাজধানীতে শরবত ও ঝালমুড়ি বিক্রি করতেন।
মিজানের বাবা নাসির হাওলাদারের বরাত দিয়ে প্রথম আলো জানায়, পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে মিজান বরিশাল থেকে ফিরেছিলেন। গতকাল রাতে তারা সবাই মুক্তার বাবা-মায়ের বাড়ি গিয়েছিলেন, সেখান থেকেই বাসায় যাচ্ছিলেন তারা।
নাসির জানিয়েছেন, হোসাইন বর্তমানে তার সঙ্গেই আছে।