সাভার-কেরানীগঞ্জে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
ঢাকার সাভারের আমিনবাজারে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশ শেষে ফেরার পথে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ককটেল বিষ্ফোরণ, গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে সাভার মডেল থানা ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওইদিন সমাবেশ শেষে ফেরার পথে সন্ধ্যায় সাভারের হেমায়েতপুর তানিম ফার্নিচার কারখানা সংলগ্ন এলাকায় ককটেল বিষ্ফোরণ ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ এনে ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন বাবুসহ বিএনপির প্রায় ৪০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
অপরদিকে, সমাবেশ থেকে ফেরার পথে সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জের ওয়াশপুর এলাকায় একটি অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ করাসহ ককটেল বিষ্ফোরণ, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ এনে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায়।
মামলায় বিএনপির ৩১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাভার মডেল থানার মামলা সম্পর্কে মামলার বাদী ও সাভার মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড'কে বলেন, "বিএনপি নেতাকর্মীরা আমিনবাজারের সমাবেশ শেষে ফেরার পথে হেমায়েতপুর এলাকায় অতর্কিতভাবে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুরের পাশাপাশি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, তবে এখনো এই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।"
অপরদিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলা সম্পর্কে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর অর রশীদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড'কে বলেন, "সাভারের আমিনবাজারের সমাবেশ শেষে বিএনপি নেতাকর্মীরা ওয়াশপুর এলাকায় একটি অটোরিক্সায় অগ্নিসংযোগ করার পাশাপাশি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায় এবং স্থানীয় লোকজনকে মারধর করে। পরে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশের উপরেও হামলা করে তারা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী একজন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি, আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে," যোগ করেন ওসি।
এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত এসব মামলা 'গায়েবি ও ভিত্তিহীন' দাবি করে ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি টিবিএসকে বলেন, "সরকার পতনের বিএনপির এক দফা আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানোর জন্য এবং বিএনপির পক্ষে যেই জনস্রোত তৈরি হয়েছে সেটিকে দমন করতেই এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের লোকজন নিজেরাই রিকশায় অগ্নিসংযোগ করে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সাভারেও একইভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করতে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।"
যোগাযোগ করলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সহ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মো সালাহউদ্দিন বাবু টিবিএসকে বলেন, "যেসব অভিযোগ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এমন কোন ঘটনাই সাভারে ঘটেনি। ককটেল বিষ্ফোরণ হলো সন্ধ্যায়, আর কেউ জানবে না? গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপির চলমান আন্দোলনকে দমন করতে নেতাকর্মীদের হয়রানি করতে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে।"