২৩ দিন বন্ধ থাকার পর সিলেট দিয়ে পাথর আমদানি শুরু
পাথর ও চুনাপাথর আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে ২৩ দিন বন্ধ থাকার পর সিলেট বিভাগ দিয়ে পাথর আমদানি আবারও শুরু হয়েছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে তামাবিলসহ সিলেট বিভাগের সকল স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর আমদানি শুরু হয়।
তামাবিল স্থল বন্দরের পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, 'শুল্কবৃদ্ধিজনিত কারণে ব্যবসায়ীরা এতদিন আমদানি বন্ধ রেখেছিলেন। আজ থেকে আবার পাথর আমদানি শুরু হয়েছে।'
পাথর ও চুনাপাথর আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ৭ জানুয়ারি থেকে আমদানি বন্ধ রাখেন আমদানিকারকেরা।
গতকাল মঙ্গলবার আমদানিকারক এবং কাস্টমস কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে পাথর আমদানিতে শুল্ক (ইমপোর্ট অ্যাসেসমেন্ট রেট) বৃদ্ধি নিয়ে সমঝোতার পর আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন আমদানিকারকেরা।
সিলেট চেম্বার অভ কমার্সের সহ-সভাপতি ও সিলেট কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সাবেক সভাপতি মো. এমদাদ হোসেন বলেন, 'চারমাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণায় আমদানিকারকেরা বিপাকে পড়েন। এ নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মঙ্গলবার ব্যবসায়ীরা এক বৈঠকে আলোচনার পর সমঝোতার মাধ্যমে নতুন শুল্ক নির্ধারণ করা হয়।'
আমদানিকারকদের অভিযোগ ছিল, গত চারমাসের মধ্যে দুইবার পাথর আমদানিতে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাড়িয়েছে কাস্টমস। এতে আমদানিকারকদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
তারা জানান, প্রতি টন পাথর সর্বোচ্চ আট থেকে ১০ ডলারে তারা আমদানি করেন। তবে এ পাথরের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ নিম্নমানের থাকায় তা ফেলে দিতে হয়।
গত বছরের জুলাই পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পাথর আমদানি মূল্য নির্ধারণ করে ১১ ডলার। ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদের পর ৭৫ সেন্ট বৃদ্ধি নির্ধারণের পর নতুন অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু দাঁড়ায় ১১.৭৫ ডলার।
এরপর ৪ জানুয়ারি আবারও অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ১.২৫ ডলার বৃদ্ধি করে ১৩ ডলার নির্ধারণ করে চিঠি দেয় কাস্টমস। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সিলেট বিভাগের সব স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, সিলেট সীমান্তের কাছে ভারতের পাথর-চুনাপাথরের খনিসমৃদ্ধ মেঘালয় রাজ্যের অবস্থানের কারণে অন্য স্থানের তুলনায় কম পরিবহন খরচ ও কিছুটা কম দামে মেঘালয় থেকে পাথর আমদানি করেন সিলেট অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।
এ কারণে সিলেটের গোয়াইনঘাটের তামাবিল, বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর ছাড়াও কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাগলি, বড়ছড়া ও চারাগাঁও এবং ছাতকের ইছামতী ও চেলা স্টেশন দিয়ে চুনাপাথর ও পাথর আমদানি হয়ে থাকে।
শুল্ক বিভাগের তথ্যমতে, সিলেট অঞ্চলের স্থল বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার টন পাথর ও চুনাপাথর আমদানি হয়।