ব্যাংক ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব ব্যাংকারদের
পরবর্তী অর্থবছর থেকে ব্যাংক ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে ব্যাংকের এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংকের কর্পোরেট আয়করের হার ৩০ শতাংশে নিয়ে আসার সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।
আয়কর আইন ২০২৩ অনুসারে, এখন ব্যাংকগুলোকে ৩৭.৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। আগামী অর্থবছরে একটি ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে কর্পোরেট আয়করের হার ৩০ শতাংশে নিয়ে আসার সুপারিশ করেছে ব্যাংকের এমডিদের সংগঠনটি।
এনবিআর বরাবর পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ঋণ এবং ক্রেডিট কার্ড একাউন্টসহ সকল অ্যাকাউন্টের উপর আবগারি শুল্ক প্রযোজ্য।
আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে এই শুল্ক থেকে অব্যাহতি চেয়েছে এবিবি।
বর্তমানে একজন অ্যাকাউন্টধারীকে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা জমা করার জন্য ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। ৫ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা জমা করার জন্য আবগারি শুল্কের হার ৫০০ টাকা, ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার জন্য ২৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকার জন্য ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার উপরে যে কোনও পরিমাণ অর্থ জমা করার জন্য আবগারি শুল্কের হার ২৫ হাজার টাকা।
ব্যাংক ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের আবগারি শুল্ক অন্যায্য বলে মনে করেন ব্যাংকাররা৷
এনবিআরকে দেওয়া চিঠিতে এবিবি বলেছে, "দেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাজস্ব উৎপাদনের গুরুত্ব এবং জাতীয় কোষাগারে ব্যাংকিং খাতের অবদান সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত। ব্যাংকিং খাত বহু বছর ধরে সরকারের প্রতি অনুগতভাবে অবদান রেখে আসছে।"
চিঠিতে আরো বলা হয়, "প্রতি বছর রাজস্ব বোর্ডে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর প্রদান ছাড়াও ব্যাংকগুলো আমানতকারী, গ্রাহক, সরবরাহকারী, পরিষেবা প্রদানকারী এবং ব্যাংক কর্মচারীদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ এবং প্রদানে নিযুক্ত রয়েছে৷ আমরা বিশ্বাস করি, ব্যাংকগুলো সরকারি কর আদায় বৃদ্ধি করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে।"
চিঠিতে এবিবি ৫০ লাখ টাকার বেশি ব্যাংক ঋণ এবং ৫ লাখ টাকার বেশি ক্রেডিট কার্ডের জন্য পিএসআর জমা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
তারা ফিক্সড ব্যাংক ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট খোলা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রমাণ দেখানোর যে বাধ্যবাধকতা ছিল সেটিও মওকুফ করতে বলেছে।
এবিবি আরও প্রস্তাব করেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণকে অনুমোদিত খরচ হিসাবে বিবেচনা করা; জিরো-কূপন বন্ডে বিনিয়োগের জন্য কর প্রণোদনার আওতায় ব্যাংকগুলোকে নিয়ে আসা; সম্পূর্ণ সিএসআর ব্যয়কে কর নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অনুমোদিত ব্যয় হিসাবে বিবেচনা করা; কোম্পানির আনুষঙ্গিক খরচ বা পারকুইজিট এর অনুমোদন সীমা ১৫ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা।
এবিবি চায় নিয়োগকর্তা কর্তৃক কর্মচারীকে প্রদত্ত প্রণোদনা বোনাসগুলো আগের মতোই পারকুইজিটের সুযোগ থেকে বাদ দেওয়া হোক।
তারা ব্যাংকের দেওয়া সিকিউরিটি কাস্টোডিয়াল সার্ভিসকে ভ্যাট অব্যাহতিপ্রাপ্ত সেবার তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব করেছে৷