বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকের ৪ শাখায় লেনদেন শুরু, স্থগিত ৩টিতে
বান্দরবানের ৭টি শাখার মধ্যে ৪টি শাখায় ফের লেনদেন শুরু করেছে সোনালী ব্যাংক। এখনো ঝুঁকিপূর্ণ মনে করায় রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি শাখার লেনদেন স্থগিত রাখা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার টিবিএসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম (বান্দরবান) মো. ওসমান গণি।
তিনি বলেন, "মঙ্গলবার রাতে সোনালী ব্যাংক রুমা শাখা ও বুধবার দুপুরে থানচি শাখার ডাকাতির ঘটনায় বান্দরবানের ৭ টি শাখার মধ্যে সদর ছাড়া বাকি ৬ শাখার লেনদেন বন্ধ করে দেই। আজ বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় এবং ঈদের আগে গ্রাহকদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে কম ঝুঁকিপূর্ণ ৪ শাখায় ফের লেনদেন শুরু করেছি।"
গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ও বুধবার (৩ এপ্রিল) পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানের তিনটি ব্যাংকে সশস্ত্র হামলা ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
গত মঙ্গলবার রাত আটটায় প্রথমে সোনালী ব্যাংক রুমা শাখা ও বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক থানচি শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার রাতে অপহরণ করা হয়েছে সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিন রাসেলকে।
রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে রুমা উপজেলা প্রশাসন ভবনে হামলা চালায় একদল সশস্ত্র গোষ্ঠী। এই সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা রক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করে ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করেছে সন্ত্রাসীরা।
তারা এই সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আানসার ভিডিপির দুটি এসএমজি ও ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চীনা রাইফেল ও ৩২০ রাউন্ড গুলি এবং আনসার সদস্যদের চারটি শর্টগান ও ৩৫ রাউন্ড গুলি লুট করে।
অপহরণের ৪০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত নেজাম উদ্দিনের সন্ধান মেলেনি।
ঘটনার পরদিন বুধবার (৩ এপ্রিল) পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে বুধবার বিকালে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, "ব্যাংকে লুটপাট করা হয়েছে, অস্ত্র লুট করে ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করা হয়েছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। ম্যানেজার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।"
থানচির দুই ব্যাংক থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা লুট
এদিকে রুমায় ব্যাংক লুটের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার দুপুরে থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকেও লুটের ঘটনা ঘটেছে।
থানচি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন জানান, বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে ৫০-৬০ জনের একটি ডাকাত দল থানচি বাজারের দুটো ব্যাংকের শাখায় লুটপাট ও ডাকাতি করে। সোনালী ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা ও কৃষি ব্যাংক থেকে আড়াই লাখ টাকা লুট হয়েছে বলে ব্যাংক সূত্র নিশ্চিত করেছে
থানচি কৃষি ব্যাংক শাখার ম্যানেজার হ্লাসুইথোয়াই মারমা জানান, "বুধবার দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ করে ২০-৩০ জনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ কৃষি ব্যাংকে ঢুকে পড়ে। আমাদের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের আলাদা এক রুমে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে। এরপর ক্যাশে থাকা আড়াই লাখ টাকা নিয়ে চলে যায়। একই সময়ে বাজারের সোনালী ব্যাংকেও হানা দেয় ডাকাত দল।"