৬ ফুট উঁচুতে প্রবাহিত নদীর পানি, দক্ষিণাঞ্চলে পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ
প্রলয়ংকারি ঘূর্ণিঝড় রিমাল গতকাল রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ পটুয়াখালীর খেপুপাড়া উপকূলে আঘাত হেনে সারারাত তাণ্ডব চালায়। তবে এখন এটি স্থলভাগের ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে।
এমনটাই জানিয়েছে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল। তিনি বলেন, "ঘূর্ণিঝড়টি আরো দু-এক ঘণ্টা সময় নেবে স্থলভাগ অতিক্রম করতে। এরপরে ভারী বৃষ্টিপাত হয়ে ঘূ্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে যাবে।"
তিনি জানান, গতকাল রাতেই ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ বরিশাল স্থলভাগে ঢুকে পড়ে। তখন বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭৮ কিলোমিটার। বর্তমানে বায়ুর চাপ কমে আসায় ৩৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে।
অঞ্চলটিতে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫৯ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা টানা ও ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল শহরে জোয়ারের পানি ঢুকে উল্লেখযোগ্য এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শহরের উপকণ্ঠ, জেলার বিভিন্ন উপজেলা সদর ও আশপাশের ইউনিয়ন পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বরিশাল চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের বাসিন্দা সুমন বেপারী বলেন, "আমাদের বাড়িঘর সব তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি আর বাতাসে ঘর, গাছপালা ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে।"
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম জানান, বিভাগের সবগুলো নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ নদীরগুলোর কয়েকটি ১ থেকে দেড় মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কয়েকজন পর্যবেক্ষক জানিয়েছেন, বিভাগের ছয় জেলায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তেঁতুলিয়া, কীর্তনখোলা ও মেঘনা নদীর পানি জোয়ারের সময় ৬ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যে কারণে এই নদীর নিকটবর্তী এলাকা বেশ প্লাবিত হয়েছে। এর সাথে ভারী বৃষ্টিপাত আরো পানি বাড়িয়েছে। পানি নামতে সপ্তাহখানেক সময় নেবে বলেও জানান তারা।
এদিকে বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করছে।