তীব্র ভিড়ে মেট্রোযাত্রীদের দুর্ভোগ
দেশব্যাপী চলছে শিক্ষার্থীদের 'বাংলা ব্লকেড' আন্দোলন। এর জেরে বিক্ষোভকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কের মোড় অবরোধ করেন এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। তাই যানজট এড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে বহু মানুষ এখন মেট্রোরেলেই ভরসা রাখছেন।
কিন্তু রাজধানীর মেট্রো স্টেশনগুলোতে গিয়ে তাদের ভয়াবহ দুর্ভোগ এবং যাত্রী ভিড়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসলিমাকে কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশনে পোর্টেবল ফ্যান হাতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, 'প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে এখানে অপেক্ষা করছি। ইচ্ছে ছিল আগারগাঁও যাওয়ার। আমি এই আন্দোলনকে সমর্থন করি, কিন্তু এই গরম আবহাওয়া এবং ট্র্যাফিকের মধ্যে আমার এই ঝামেলা ভালো লাগে না।'
মোতালেব প্লাজায় মোবাইল সার্ভিস টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত মনিরও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, 'আমি এই আন্দোলনে খুব একটা আগ্রহী নই। কিন্তু এখন আমার ব্যবসায়ও ব্যাঘাত ঘটতে শুরু হয়েছে। আমি এখানে মেট্রো স্টেশনে দেড় ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছি, এতক্ষণে আমি মাত্র সিঁড়িতে পৌঁছেছি।'
উত্তরাগামী বেসরকারি চাকরিজীবী রকিবুল ইসলামকেও কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশনে দেখা গেছে।
তিনি বলেন, 'আমি দুই ঘন্টা ধরে এই সিঁড়িতে অপেক্ষা করছি। আমি মনে করি, কোনো কোটা থাকা উচিত নয়। যদি আমাকে এই স্টেশনে আরও কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়, তাও আমি অপেক্ষা করব। কারণ আমি শিক্ষার্থীদের দাবি সমর্থন করি।'
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মাশরুহা জাবিনও কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন।
তিনি বলেন, 'ভাগ্যক্রমে আমার কাছে এমআরটি পাস রয়েছে, তাই আমাকে লাইনে অপেক্ষা করতে হবে না। কিন্তু এই ভিড়ের মধ্যে ঢোকা সহজ হবে না।'
তিনি আরও বলেন, 'একজন শিক্ষক হিসেবে আমি নৈতিকভাবে এই আন্দোলনকে সমর্থন করি। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে যখন আমার কথা আসে, তখন এই অসুবিধা আমার ভালো লাগে না। যদি দেখি সিস্টেমে কোন পরিবর্তন হলো না, তাহলে নিশ্চয়ই আমার খারাপ লাগবে। তাই মনে প্রশ্ন জাগে, এসবের মানে কী?'
কারওয়ান বাজার স্টেশনের টিকিট মেশিন অপারেটর রনজিত কান্তি দে বলেন, উপচে পড়া ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, 'অবরোধের কারণে আমরা আমাদের দক্ষিণ গেট বন্ধ করে দিয়েছি, তা না হলে আমরা ভিড় সামলাতে পারতাম না। অন্যদিকে, সাধারণত সকালে আমরা কেবল একটি টিকিট কাউন্টার এবং ভেন্ডিং মেশিন ব্যবহার করি। কিন্তু ভিড় নিয়ন্ত্রণে গত কয়েকদিন ধরে আমরা একই সঙ্গে দুটি টিকিট বিক্রির বুথ চালু রাখছি।'
তিনি আরও বলেন, 'মানুষ নির্দেশনা শুনছে না। এখানে সবকিছু একটি সিস্টেম দ্বারা চলে, আমরা এটি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।'
বেসরকারি চাকরিজীবী আবু সাঈদ কড়া ভাষায় কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'এই প্রতিবাদ করে কী লাভ? কিছুই বদলাবে না।'