ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে রামপুরা-বাড্ডা, তবে আশঙ্কা এখনও কাটেনি
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের হটস্পট-এ পরিণত হওয়া রাজধানীর রামপুরা ও বাড্ডা এলাকার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। তবে এখনও জনমনে আশঙ্কা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সরেজেমিনে দেখা যায়, রামরপুরা, বাড্ডা ও প্রগতি সরণী এলাকার মূল সড়কের পাশের এবং পার্শ্ববর্তী আবাসিক এলাকায় অবস্থিত প্রায় সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কারাখানা, রেস্টুরেন্ট ও দোকান চলছে স্বাভাবিকভাবেই।
তবে মেরুল বাড্ডার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকের শাখাগুলো এখানও চালু হয়নি। ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউসিবি ব্যাংক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক।
বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০০ গজ উত্তরে বাড্ডা-প্রগতি সরণী মূল সড়কের পাশের আলম ট্রেডার্স নামের রড সিমেন্টের দোকানের মালিক আব্দুস সালাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। পুলিশ ও বিজিবি নিয়মিত টহল দিচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'প্রায় ৭ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার [২৪ জুলাই] আবার ব্যবসা শুরু করেছি। তবে এখনও একটা আশঙ্কা কাজ করছে আমাদের মধ্যে। কারণ পাশের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে যখন-তখন আন্দোলন শুরু হতে পারে, এমন গুজব আছে।'
আব্দুস সালাম আরও বলেন, 'এখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে, তবে খোলার পর বোঝা যাবে।'
১৯ জুলাই এ এলাকায় সংঘটিত সহিংসতার বিষয়ে আব্দুস সালাম বলেন, 'আন্দোলন চলাকালে গত শুক্রবার রাতে দেকানের সামনে থাকা সিসিটিভি ভেঙে ফলেছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়াও দোকানে শাটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'
রামপুরা কাঁচাবাজার এলাকায় অবস্থিত ওই এলাকার জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট আল-কাদেরিয়ার ব্যবস্থাপক মাসুম আহমেদ বলেন, 'এই এলাকার পরিস্থিতি বেশ স্বাভাবিক আছে বলেই আমরা গত মঙ্গলবার থেকে রেস্টুরেন্ট চালু করেছি।'
তিনি বলেন, 'আন্দোলন ও সংঘর্ষ দীর্ঘদিন চলায় আমরাসহ এলাকার সবার মনে একটা ভয় তৈরি হয়েছে। আশা করি সবকিছু কাটিয়ে উঠে আগের অবস্থায় ফিরতে পারব।'
মেরুল বাড্ডা এলাকায় রাজা স' মিলের মালিক বাসুদেব সাহা বলেন, 'আন্দোলনের সময় মিলের সামনে রাখা কয়েক লাখ টাকার কাঠের গুঁড়ি লুটপাট হয়ে গেছে। দুর্বৃত্তরা অনেকগুলো কাঠের গুঁড়ি মূল সড়কের ওপর নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল।'
তিনি আরও বলেন, 'এত বেশি ক্ষতি হয়েছে যে, তা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। বসে থাকলে ব্যবসা হবে না। তাই গত সোমবার থেকেই মিল চালু করেছি।'
স্থানীয়রা বলেন, গত ১৬ জুলাই থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংহিংসতা তৈরি হলে এসব এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কারাখানা, রেস্টুরেন্ট ও দোকানসহ সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এলাকার মানুষের জীবিকা পড়ে যায় অনিশ্চয়তার মধ্যে।
স্থানীয়রা বলছেন, কারফিউ জারি করার পর এ এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া শুরু হয়। এখন প্রায় সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছে।