জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজের
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের নৃশংস হামলার ঘটনায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে চার দফা দাবি জানিয়েছে 'নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজ'।
শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন শিক্ষকেরা। এ সময় তারা চার দফা দাবি পেশ করেন।
শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করা ও হলকে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীমুক্ত করা; উপাচার্য, প্রো-উপাচার্যদ্বয়, ট্রেজারার ও প্রক্টরের পদত্যাগ; ১৫ জুলাই রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার এবং দ্রুত আরিফ সোহেল ও সাব্বির রহমান লিয়নসহ অন্যায্যভাবে গ্রেপ্তারকৃত সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, 'আমরা এ সরকারকে আর বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করি না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ছাত্রদের ওপর তার পেটোয়া বাহিনী, পুলিশবাহিনী লেলিয়ে দিয়েছেন, আবার নিজেই বলছেন ছাত্রদেরকে ধরবেন না।'
হল বন্ধ করে দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা জাবি ক্যাম্পাসের আশপাশের গ্রামগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সেখানেও তাদেরকে তাড়া করা হচ্ছে, হয়রানি করা হচ্ছে। তাই আমরা অবিলম্বে হল খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।'
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন জলি বলেন, 'গত ১৫ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নৃশংস হামলার ঘটনায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি।'
'আমরা এর আগেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছি। এবারও শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির পক্ষে দাঁড়িয়েছি,' তিনি আরও বলেন।
সমন্বয়ক আরিফ সোহেলের জামিন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেলের জামিন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার বড় ভাই আলী জুয়েল।
তিনি বলেন, 'মহামান্য আদালত আরিফের জামিন মঞ্জুর করেছেন। তবে আমরা এখনো তার সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। এখন ডিবি কার্যালয় থেকে তাকে মুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।'