রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হামলার শিকার, অভিযোগ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে
রাজশাহী কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সোহেল রানা হামলার শিকার হয়েছেন। হামলার পেছনে স্থানীয় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর কালেক্টরেট মাঠ ও হাজী মুহাম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দুদফায় তার ওপর হামলা হয়।
আহত সোহেল রানা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শংকর কে. বিশ্বাস জানিয়েছেন, সোহেল রানার শরীরে বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত।
সোহেল রানা বলেন, বিকেলে কালেক্টরেট মাঠে সমন্বয়কদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের আমন্ত্রণ না করায় তর্ক শুরু হয়।
'এক পর্যায়ে ছাত্রদলের নেতারা আমাকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে,' বলেন এ সমন্বয়ক।
তিনি আরও বলেন, 'সেখান থেকে পালিয়ে রিকশা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে হাজী মুহাম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের গলিতে ২০–২৫ জন ছাত্রদলকর্মী রিকশা থেকে নামিয়ে বাঁশ ও রড দিয়ে পিটিয়ে আমাকে মারাত্মক আহত অবস্থায় ফেলে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে আনেন।'
সোহেল রানার দাবি, কলেজে ছাত্রদলের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় তার ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির দাবি করেন, এ হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের কেউ জড়িত নয়।
'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছ। তাদের একটি গ্রুপ তার [রানা] ওপর হামলা চালিয়েছে,' বলেন তিনি।
আবির আরও বলেন, 'সোহেল রানা একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। সে আগে জাসদ ছাত্রলীগ করত। রাজশাহী কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক কমিটি না থাকা সত্ত্বেও নিজেকে সে সমন্বয়ক পরিচয় দিত। সেখান থেকে কারও কারও তার ওপর ব্যক্তিগত রেষারেষি থাকতে পারে।'
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী কলেজের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুর রহিম বলেছেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের সভা ডাকার সঙ্গে এ হামলার কোনো সম্পর্ক নেই।
'ঢাকার এক শিক্ষার্থী ফাতিন নিজেকে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দাবি করে সভা ডেকে কমিটি গঠন করছিলেন। কিন্তু তিনি আসলে ভুয়া সমন্বয়ক। এ খবর পাওয়ার পর আমরা রাজশাহীর নেতারা সেখানে গিয়ে তাদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দিই,' বলেন তিনি।
সোহেল রানার ওপর হামলার বিষয়ে আব্দুর রহিম বলেন, 'এটি ব্যক্তিগত রেষারেষির কারণে ঘটতে পারে।'
রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফুল আলম জানান, হামলার ঘটনার বিষয়ে শুনেছেন, তবে কারা জড়িত তা তিনি জানেন না।
অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।