আশুলিয়ায় আস-সাবুর নিহতের ঘটনায় আরেকটি মামলা মায়ের, আগের মামলার বিষয়ে জানতো না পরিবার
ঢাকার আশুলিয়ায় আন্দোলনে সহিংসতায় আস-সাবুর (১৬) নামে এক ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ঢাকা ১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলামসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল রোববার (১৮ আগস্ট) রাতে আশুলিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত আস-সাবুরের মা মোছা. রাহেন জান্নাত ফেরদৌসী।
আস-সাবুর নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানাধীন মহাদেবপুর গ্রামের এনাফ নাজেদ জাকিরের ছেলে। মামলায় বলা হয়েছে, আস-সাবুর পরিবারের সঙ্গে আশুলিয়ার জামগড়া শিমুলতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি স্থানীয় শাহীন স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এর আগে একই ঘটনায় আস-সাবুরের 'প্রতিবেশী চাচাতো ভাই' দাবি করে ১৬ই আগস্ট ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক দুই এমপিসহ মোট ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন মো. সাহিদ হাসান ওরফে মিঠু নামে এক ব্যক্তি।
মামলায় নিজের পরিচয় হিসাবে তিনি তার পিতার নাম আকরাম আলী মোল্লা এবং ঠিকানা আশুলিয়ার চিত্রাশাইল এলাকা বলে উল্লেখ করেছিলেন।
যদিও নিহত ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের দাবি, এর আগে আস-সাবুরকে হত্যার ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা দায়েরের বিষয়ে কিছু জানতেন না তারা। বিষয়টিকে উদ্দেশ্যমূলক উল্লেখ করে পূর্বের সেই মামলার বাদী কোনো একটি পক্ষ থেকে 'টাকা খেয়ে' বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে মামলাটি দায়ের করে থাকতে পারে বলে ধারণা করেছেন তারা।
যোগাযোগ করলে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ মামলা বিষয়টি নিশ্চিত করে টিবিএসকে বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
একই ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের বিষয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন,"দুটি মামলায় পিতার নাম আলাদা। আমরা মামলা নিয়েছি, তদন্তের পর বিস্তারিত বলতে পারবো"।
এ বিষয়ে আস-সাবুরের মা রাহেন জান্নাত ফেরদৌসী মুঠোফোনে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমার সন্তানকে হত্যা করার ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে অথচ আমরা পরিবারের কেউই জানিনা। কোথা থেকে অপরিচিত কেউ একজন 'প্রতিবেশী চাচাতো ভাই' দাবি করে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় অসংখ্য ভুল তথ্যও দিয়েছেন তিনি। আমার ছেলের বাবার নামেও ভুল করা হয়েছে। আমি তাকে ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছিলাম, সে আমাকেও চিনে না। আমার ছেলের নাম বলার পরেও চিন্তে পারেনি। আমরা তো এবার তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করবো।"
মামলার এজাহারে ঘটনার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৫ই আগস্ট ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিতে বাসা থেকে বের হয় আস-সাবুর। সেদিন বিকাল ৩টা পর্যন্ত বাদীর সাথে আস-সাবুরের যোগাযোগ হয়। পরদিন ৬ই আগস্ট বিকাল ৫টা নাগাদ আশুলিয়া থানাধীন বাইপাইল মোড়ে পোড়ানো অবস্থায় আস-সাবুরের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর গ্রামে দাফন করা হয়। পরবর্তীতে বাদী জানতে পারেন, মামলায় উল্লিখিত আসামীরা গত ৫ই জুলাই আস-সাবুরকে মারধরের পর গুলি করে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে তার লাশটি পুড়িয়ে দেয়।