রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মচারীরা ব্যবসায়ী হয়ে গেছেন: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
জাতীয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মচারীরা ব্যবসায়ী হয়ে গেছেন অথবা ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিবিদ হচ্ছেন। বর্তমান সরকার ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি এই অবস্থার পরিবর্তন কামনা করে এবং এ লক্ষ্যেই কাজ করছে বলে জানান তিনি।
বুধবার (২ অক্টোবর) সিলেটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার মূল্যায়নে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রথম আঞ্চলিক মতবিনিময়ে এ কথা বলেন ড. দেবপ্রিয়। মতবিনিময় সভায় সিলেটের বিভিন্ন সেক্টরের অংশীজনেরা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
দেবপ্রিয় বলেন, "বিগত এক দশক বা তারও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে উন্নয়নের কথা প্রচারিত হয়েছে। তবে, আমরা এই দাবিগুলো নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছি এবং প্রশ্ন করেছি, কেন এত উন্নয়নের পরেও কর এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়েনি, কেন কোনো বিনিয়োগ হয়নি, কেন দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমেনি।"
"এই কারণেই আমরা মনে করি, তথ্যগুলো সঠিক ছিল না। আজকের উদ্যোগ অসমতা ও সংস্কারের লক্ষ্যে। আমরা এখানে চোর ধরতে আসিনি; আমরা চুরির প্রক্রিয়াটি বুঝতে কাজ করছি," যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, "দেশে ভীতি ও আস্থাহীনতা এখনও বিদ্যমান। ভয় ভীতির ঊর্ধ্বে সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে কথা বলতে হবে। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে সবার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।"
একইসঙ্গে অর্থনৈতিক অবস্থার সংস্কারে এ ধরনের আলোচনা অব্যাহত রাখা হবে। সবার মতামত এবং বাস্তবতা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই শ্বেতপত্র প্রণয়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠোনে চা, পর্যটন, মৎস, কৃষি, যোগাযোগ, রেমিটেন্সসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতের দুর্নীতি, অবহেলা ও উন্নয়নবঞ্চনা নিয়ে কথা বলেন অংশীজনেরা।
তারা জানান, সিলেটে একের পর এক মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যার বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়নি। প্রকল্প মাঝপথে আটকে থাকলেও বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। ফলে উন্নয়নবঞ্চিত থেকেছে সিলেট।
বিভ্রান্ত পরিকল্পনা ও লুটপাটের কারণে হাইটেক পার্ক, অর্থনৈতিক অঞ্চল, পর্যটন প্রভৃতি বিষয়ে ব্যয় করা অর্থ মানুষের জীবনে কোনো সুফল বয়ে আনতে পারেনি বলে জানান তারা।
সভায় বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।