মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পাওয়া ৮৪ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য যাচাই হচ্ছে
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত ৮৪ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য যাচাই-বাছাই করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে। তাদের ধারণা- কোটায় চাকরিপ্রাপ্তদের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৯০ হাজার হতে পারে।
এর আগে গত ১৫ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সরকারি, আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজন চাকরি পেয়েছেন, এর তালিকা চেয়ে সব মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। এর তিন মাসে এ তথ্য পেয়েছে মন্ত্রণালয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে। কর্মকর্তারা মুক্তিযোদ্ধার নামের বিপরীতে কোটা সুবিধা নিয়েছেন, তাদের নাম গেজেটে ও সমন্বিত তালিকায় আছেন কি না, তা দেখা হচ্ছে। এর বাইরে এমআইএসে নাম আছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে। অনেকের নাম এমআইএসে নাই। কোনো কারণে নাম ওঠেনি। এসব ঠিক থাকলে তাদের চাকরি নেওয়ার প্রক্রিয়া ঠিক আছে বলে বিবেচনা করা হবে।
আরও জানা গেছে, সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে পাঠানো তালিকা যাচাই করা হচ্ছে। অর্ধেকের কম তথ্য যাচাই করা হয়েছে। বাকিগুলো যাচাইয়ে চলতি মাস পুরোটা লেগে যাবে। যাদের নাম কোনো তালিকায় পাওয়া যাবে না, তাদের আলাদা করে তালিকা করা হবে। এরপর সচিবরে কাছে তালিকা পাঠানো হবে। এরপর উপদেষ্টার হাতে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সবচেয়ে বেশি চাকরি হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে। কারণ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ হয়েছিল। এর বাইরে পুলিশে চাকরি নেওয়ার সংখ্যাও অনেক বেশি।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ ব্যাংকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে চাকরি নেওয়ার হার বেশি।
তিনি জানান, গেজেট বাতিল হওয়ার পরে অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম এমআইএসে আছে। এসব নতুন করে যাচাই করা হচ্ছে। গেজেট বাতিল হওয়ার পর আপিল করতে পারে। এজন্য অনেকের নাম এমআইএস থেকে বাদ দেওয়া হয়নি।এমআইএসে যাদের নাম আছে তারা ভাতা পাচ্ছেন। অনেকের নামে অমিল রয়েছে। তবে নাম একেবারে ভিন্ন হলে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নামের বানান ভুল থাকলে সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।
২০২২ সাল পর্যন্ত এক লাখ ৯৪ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে স্মার্ট আইডি কার্ড পেয়েছেন ৯৫ হাজার জীবিত মুক্তিযোদ্ধা।
এখন জীবিত রয়েছেন ৯০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা। দুই লাখের বেশি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। এক লাখ ৯৬ হাজার জনকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এবং ৬ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে ভাতা দেওয়া হয়। কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে শহিদ, খেতাবপ্রাপ্ত এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারদের ভাতা দেওয়া হয়।
কোনো মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য না পাওয়ায় গত ২৯ আগস্ট ফের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে তাগিদ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হলেও সব মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাওয়া যায়নি।