আগরতলার উদ্দেশ্যে বিএনপির ৩ সহযোগী সংগঠনের রোড মার্চ শুরু
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ভারতের আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেছে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন—জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদল।
আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হয়। লংমার্চের আগে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা কিনেছি, এই স্বাধীনতা আমরা বিক্রি করে দিবো? আমরা পিন্ডির কাছে থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি এটা দিল্লির কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করব, এই রক্ত আমাদের নেই।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, দিল্লির সাম্প্রদায়িক শাসকগোষ্ঠী একজন ভয়ংকর রক্তপিপাসু লেডি ফেরাউনকে টিকিয়ে রাখার জন্য সমর্থন দিয়ে আসছে। আজকের ভারতীয় শাসকগোষ্ঠী পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছে সমালোচিত হলেও তারা নিজেদের গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দাবি করে। তারা ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ এবং শ্রীলঙ্কাকেও নিজেদের কথায় পরিচালিত করতে চায়। কিন্তু তারা ভুলে গেছে, বাংলাদেশের মানুষের রক্তের যে তেজ, আত্মশক্তি এবং বীরত্ব, তা দিল্লির শাসকরা কখনোই বুঝতে পারবে না।
লংমার্চ কর্মসূচি ঘিরে সকাল ৭টা থেকেই তিন সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল সহকারে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন। এসময় তাদের ভারতবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিফর্মধারী পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এছাড়া লংমার্চের অংশ হিসেবে ভৈরব মোড়ে একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী এবং সভাপতিত্ব করবেন যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না।
লংমার্চটি আখাউড়ায় সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে। সেখানে প্রধান অতিথি থাকবেন যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না এবং সভাপতিত্ব করবেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী।
এর আগে, গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের অভিমুখে পদযাত্রা করে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। নয়াপল্টন থেকে শুরু হওয়া এই পদযাত্রা রামপুরা পর্যন্ত গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা আটকে দেয়। পরে একটি প্রতিনিধি দল ভারতীয় হাইকমিশনে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেয়।
প্রসঙ্গত, গত ২ ডিসেম্বর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামক একটি সংগঠনের সমর্থকরা হামলা চালায়। তারা সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে ঢুকে বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে তাতে আগুন দেয় এবং ভাঙচুর করে।