ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালত ৩০ মিনিট উভয় পক্ষের যুক্তি শোনার পর চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
শুনানি শেষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভুইয়া বলেন, "জামিন শুনানিতে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ বিরোধিতা করেছি। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন।"
চিন্ময়ের আইনজীবী সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য টিবিএসকে বলেন, "ওনার (চিন্ময়) বিরুদ্ধে যে সেকশনগুলো দিয়েছে, সেগুলো প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। যে অভিযোগটি আনা হয়েছে জাতীয় পতাকা অবমাননা, এটি জাতীয় পতাকা ছিল না। তাই আমরা আদালতকে বলেছি, এই মামলা চলতে পারে না। আদালত জামিন না মঞ্জুর করেছেন। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।"
এদিকে, চিন্ময়ের শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ। আদালতের প্রবেশ মুখে পুলিশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে এবং মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আইনজীবীদের পরিচয়পত্র দেখে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। বিচারপ্রার্থীদের বেলা ১২টার পর আদালত এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়।
গত ৩১ অক্টোবর জাতীয় পতাকা অবমাননার দায়ে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে তাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
২৫ নভেম্বর সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরের দিন মঙ্গলবার সকালে তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২৬ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রামের আদালতে চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাইফুল ইসলাম আলিফ নামের একজন আইনজীবী।
৩ ডিসেম্বর জামিন শুনানিতে চিন্ময়ের পক্ষে কোনো আইনজীবী অংশ না নেওয়ায় আদালত শুনানি পিছিয়ে ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি ধার্য করেন।
১২ ডিসেম্বর শুনানি কার্যক্রমের শুরুতে স্থানীয় আইনজীবী সুমীত আচার্যের ওকালতনামা দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। এ সময়, ওকালতনামা যাচাইয়ের জন্য ওই আইনজীবীকে উপস্থিত করার আদেশ দেন আদালত।
৩ ডিসেম্বরের পূর্ববর্তী শুনানির বিলম্বের পর, আজকের কার্যক্রম এই হাই-প্রোফাইল মামলার সর্বশেষ আইনি অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত হলো।