লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া
উন্নত চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বিশেষায়িত হাসপাতাল লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এর আগে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর সেখান থেকে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে পৌঁছান খালেদা জিয়া। বুধবার বাংলাদেশ সময় পৌনে ৫টার দিকে তারেক রহমান বিমানবন্দরের চতুর্থ টার্মিনালের রয়্যাল ভিভিআইপি গেট দিয়ে বের হয়ে নিজে গাড়ি চালিয়ে বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছান। এ সময় তারেক রহমানের সহধর্মিণী জুবাইদা রহমান তাদের সঙ্গে ছিলেন।
হাসপাতালে পৌঁছানোর পরে বাংলাদেশ থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসা চিকিৎসকেরা লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকদের কাছে খালেদা জিয়াকে কাগজপত্রসহ বুঝিয়ে দেন। প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কাগজপত্র দেখে বিএনপির চেয়ারপার্সনকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল মঙ্গলবার রাতে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করেন খালেদা জিয়া।
আজ বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় তাকে স্বাগত জানাতে বড় ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও নাতনী ব্যারিস্টার জাইমা রহমান বিমানবন্দরে উপস্থিত হন।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হজরত আলী খান বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। যুক্তরাজ্য বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারাও বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান। বিএনপির চেয়ারপারসনের আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দরের বাইরে সমবেত হন দলের কয়েক'শ নেতা-কর্মী। সেখানে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষে হাসপাতালের উদ্দেশে যাত্রা করেন বিএনপির নেত্রী।
লন্ডনের 'লন্ডন ক্লিনিক' এ কিছুদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর প্রয়োজন হলে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসা জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার শরীরে রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছিল।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তার লিভার প্রতিস্থাপন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, লিভার প্রতিস্থাপনের পর পুরো চিকিৎসায় দুই মাসের মতো লেগে যেতে পারে। চোখ ও পায়ের ফলোআপ চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়া ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন।