পালিয়ে যাওয়ার আড়াই বছর পর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার আড়াই বছর পর চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন অর্থঋণ আদালত। ৬১ কোটি টাকার ঋণখেলাপির মামলায় ইমাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে এ আদেশ দেওয়া হয়।
আইএফআইসি ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন। একই আদেশে মোহাম্মদ আলীর পরিবারের সদস্য আব্দুল করিম, আলী ইমাম, মোছাম্মৎ বলকিজা খাতুন ও জেবুন্নেছা আকতারকেও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারি রেজাউল করিম।
পি কে হালদারের মতো মোহাম্মদ আলীসহ তার পরিবারের সদস্যরা ঋণ পরিশোধ না করে পালিয়ে যেতে পারেন, এমন আশঙ্কায় তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করে আইএফআইসি ব্যাংক। ২০১২ সালে ২৩ মার্চ অর্থঋণ আদালতে মামলাটি দায়ের করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ঘনিষ্ঠজনদের তথ্যমতে, ২০১৯ সালের মাঝামাঝিতে গোপনে আরব-আমিরাতের দুবাইয়ে পালিয়ে গিয়ে বসবাস শুরু করেন মোহাম্মদ আলী।
মোহাম্মদ আলীর মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে দেশের ১৫টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা খেলাপি ঋণ ৭৯৩ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ আদায় ও চেক ডিজঅনার হওয়ায় গ্রুপটির বিরুদ্ধে ৬০টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ৫৫ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও হয়। এছাড়া চেক ডিজঅনারের দুই মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ড হয় তার বিরুদ্ধে। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে বেশিরভাগ ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। এক দশকেও ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১২-১৩ সালের দিকে তার বিরুদ্ধে একে একে মামলাগুলো দায়ের হতে থাকে।
নব্বইয়ের দশকে অবৈধ পথে পণ্য আমদানি করে ব্যবসার জন্য চট্টগ্রামে তিনি ব্ল্যাকার মোহাম্মদ আলী নামে পরিচিতি পান। এর আগে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ-টেরিবাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকানের কর্মচারি হিসেবে কাজ করতেন তিনি। নব্বইয়ের দশকে খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের বাজারের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতো তার মালিকানাধীন ইমাম ট্রেডার্স। পরে গ্রুপের ব্যবসা সম্প্রসারণ হয় গার্মেন্টস, যন্ত্রপাতি আমদানিসহ নানা খাতে। এসব খাতে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের বেশিরভাগ বিনিয়োগ হয়েছে জমি কেনায়। ২০১০ সালের পর থেকে ভোগ্যপণ্য ও ভূমি ব্যবসায় লোকসান শুরু হলে প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগ করা বিভিন্ন ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ ঋণ আটকে যায়।