২০২১ সালে বেড়েছে কন্যাশিশু নির্যাতন ও মৃত্যু
২০২১ সালে বাংলাদেশে এক হাজার ১১৭ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। আগের বছরের তুলনায় এই হার ৭৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি।
একই বছর পারিবারিক সহিংসতা, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনসহ নির্যাতনের প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টায় ২৭২ জন কন্যাশিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার। রোববার প্রকাশিত জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের (এনজিসিএএফ) ২০২১ সালের কন্যাশিশু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ২৬ হাজার ৬৯৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে শুধু ২০২০ সালেই ৬২৬ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার প্রায় ১০০ জন শিশু প্রতিবন্ধী ছিল। অন্যদিকে, ৪৫ জনকে যৌন নিপীড়নের পরে হত্যা করা হয়েছিল। প্রায় ১৫৫ জন শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়।
আজ রোববার (২৭ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি।
প্রায় ৮০৪টি ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও আটক অধিকাংশই জামিনে বের হয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে বাসাবাড়িতে কাজ করা প্রায় ৩৫ কন্যাশিশু ধর্ষণসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার। এদের মধ্যে পাঁচজনকে হত্যা করা হয়। ১৮ জন শারীরিক নির্যাতন ও ১২ জন যৌন নির্যাতনের শিকার।
এছাড়া ২০২১ সালে ২৪২ জন কন্যাশিশু আত্মহত্যা করে। এদের মধ্যে ৬১ জন প্রণয়ঘটিত কারণে এবং ৫৬ জন পারিবারিক মনোমালিন্যের পর আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশুদের মধ্যে হতাশা বেড়ে যায়।
একই সঙ্গে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনাগুলো প্রকাশ্যে আনা ও মামলা করা নিরাপদ না হওয়ায় বিষয়টিও আত্মহত্যার ঘটনায় প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।
দেশের ২৪টি জাতীয়, স্থানীয় ও অনলাইন দৈনিক পত্রিকায় ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরে প্রকাশিত শূন্য থেকে ১৯ বছর বয়সী কন্যাশিশুর ওপর নির্যাতনের ঘটনা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এনজিসিএএফ।