খেলাপী গ্রাহক মারা যাওয়ার ৪ বছর পর সোনালী ব্যাংকের মামলা!
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের খেলাপী গ্রাহক সাইফউদ্দিন চৌধুরী মারা গিয়েছেন ২০১৬ সালে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখায় তার খেলাপী ঋণের মোট পরিমাণ ৭৬ কোটি টাকারও বেশি। গ্রাহকের মৃত্যুর খবর না জেনে ব্যাংক মামলা করেছে ২০২০ সালে। খেলাপী ঋণ আদায়ে ব্যাংকের এই অবহেলায় শাখা ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছে আদালত।
দায়িত্বে অবহেলার কারণে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড আগ্রাবাদ কর্পোরেট শাখার ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবরে আদেশের কপি প্রেরণ করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান।
মঙ্গলবার বিষয়টি টিবিএসকে নিশ্চিত করেছেন অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম।
নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বরের একটি রায়ের প্রেক্ষিতে ৭৬ কোটি ৬৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৮ টাকা আদায়ের দাবিতে ২০২০ সালের ১২ আগস্ট খেলাপী গ্রাহক সাইফউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি জারি মামলা (নং-১০৯/২০২০) দায়ের করে ডিক্রিদার ব্যাংক। যদিও আদালতে চলমান থাকা অপর একটি ব্যাংকের জারি মামলা নং-৩৬/২০১৬ এর নথি অনুযায়ী ওই মামলার ৫নং দায়িক সাইফউদ্দিন চৌধুরী ২০১৬ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে আদালত নিশ্চিত হয়েছেন। অথচ একজন মৃত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ডিক্রিদার সোনালী ব্যাংক লিমিটেড জারি মামলা দায়ের করেছেন ২০২০ সালে এসে।
মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা আইনত অচল। সোনালী ব্যাংকের এ ধরণের মামলা দায়েরের ঘটনায় প্রমাণিত হয়, ডিক্রিদার ব্যাংক বিপুল পরিমাণ খেলাপী ঋণের গ্রাহকদের বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করে না। মামলায় সময়মত প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয় না। যার কারণে জনগণের আমানতের বিপুল পরিমাণ টাকা খেলাপী ঋণে পরিণত হয়ে একসময় আদায় অযোগ্য হয়ে পড়ে। ব্যাংকের নজরদারি ও সময়োচিত আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে বড় বড় ঋণ খেলাপীদের কাছ থেকে খেলাপী ঋণ আদায় অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে। এই মামলায় ডিক্রিদার ব্যাংকের দায়িত্বে অবহেলার কারণেই মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে জারি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে মনে করছেন আদালত।