ডিবিসির প্রডিউসারকে হত্যা পরিকল্পিত: পুলিশ
বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার আব্দুল বারীকে (২৭) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে কেনো এ হত্যাকাণ্ড এবং এর পেছনের কারণ উদঘাটনে পুলিশের অন্য ইউনিটগুলোর পাশাপাশি ছায়া তদন্তে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
বুধবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় বারীর বড় ভাই আব্দুল আলীম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন।
গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "প্রডিউসার আব্দুল বারী যে হত্যার শিকার তা স্পষ্ট। তিনি কেনো সেখানে গেলেন, সাথে কেউ ছিলেন কিনা, কারা হত্যা করল তা জানার চেষ্টা করছি। আমরা বাসা ও ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করব। পাশাপাশি তথ্য-প্রযুক্তিগত সহায়তায় খুনিদের শনাক্তের চেষ্টা করছি।"
বুধবার সকালে গুলশান পুলিশ প্লাজার উল্টো দিকের সড়কের পাশ থেকে আব্দুল বারীর রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে গুলশান থানা পুলিশ। তখন পুলিশ জানিয়েছিলো সাত থেকে আট ঘণ্টা আগে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এরপর সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট হত্যাকাণ্ডের আলামত সংগ্রহ করে। পরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত করা হয়।
গুলশান বিভাগ পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসান ফিরোজ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে বারীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে সে বাঁচার জন্য পানিতে নেমে পড়ে। কারণ তার জামাকাপড় ভেজা ছিল। পরে বারী আবার লেকপাড়ে উঠেএলে তাকে মাটিতে ফেলে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। তার মরদেহেরপাশ থেকে এ সময় রক্ত মাখা ছুরি, মানিব্যাগ এবং মোবাইল উদ্ধারকরা হয়েছে।
আব্দুল বারী ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিউবিটি) থেকে প্রকৌশলে পড়াশোনা করেছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে ডিবিসি নিউজের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার হিসেবে চাকুরি শুরু করেন। এরপর ফেব্রুয়ারিতে মহাখালীতে একটি ভাড়া বাসায় উঠেন। এর আগে তিনি মোহনা টেলিভিশনে কাজ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদরে।
তার আত্মীয় আনিসুর রহমান টিবিএসকে বলেন, গত ইদে বাড়িতে শেষবার বারীর সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। সে কিছুটা শান্ত স্বভাবের ছিল। তার সঙ্গে কারও শত্রুতা কিংবা কোনো বিষয় নিয়ে বিরোধের প্রশ্নই আসে না।
"তবে ডিবিসি নিউজে জয়েন করার কিছুদিন পর থেকে তার মধ্যে একটি পরিবর্তন খেয়াল করেছিলাম আমরা। সে আরও গুটিয়ে নিয়েছিল নিজেকে, কারও সঙ্গে স্বাভাবিক যোগাযোগ ছিল না তার," যোগ করেন আনিসুর।
জানতে চাইলে তার সহকর্মী ডিবিসির সিনিয়র প্রডিউসার সাফায়েত হোসেন টিবিএসকে বলেন, "আমাদের টিমে জয়েন করার পর থেকে কারও সঙ্গে কোনো বিরোধের বিষয় আমরা খেয়াল করিনি। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। তবে কিছুদিন আগে চাকুরি ছেড়ে দেবে বলে আমাকে জানিয়েছিল। কিন্তু কী কারণে এমনটি জানিয়েছিল তা শেয়ার করেনি।"