সবজির দাম কমলেও চাল-ডাল বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই
বাজারে সবজি সরবরাহ ভালো থাকায় স্বস্তি মিলেছে সবজির বাজারে। তবে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল-ডাল-আটা তেল।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াটোলা বৌ-বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময় কিছুটা কমদামে সবজি কিনতে পারায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতারা।
শীত মৌসুমে আলু বাদে ৫৫-৬০ টাকা কেজির নিচে যেখানে কোনো তরকারি কেনা যেত না, সেখানে এখন ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা। ছোট লাউ পাওয়া যাচ্ছে ৪০ টাকায়, আলু কেজি ২৫ টাকা। বাজারে অধিকাংশ সবজি কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে অনেকে সবজি খাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছেন।
নয়াটোলা বৌ-বাজার থেকে আধা কেজি চিংড়ি মাছ কিনেছেন জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, "ছোট লাউ নিয়েছি ৩০ টাকা। বাসায় পটল, জালি কুমড়া আছে। এই আধা কেজি চিংড়ি মাছ দিয়ে চার দিন সবজি রান্না করা যাবে।"
দাম কমেছে পাকিস্তানি কক মুরগির
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে পাকিস্তানি কক মুরগির দাম ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়। ফার্মের মুরগির লাল ডিমের ডজন ১২০ টাকা।
তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ব্রয়লার মুরগি, গরু ও খাসির মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। গরুর মাংস ৬৫০ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ টাকায়।
এদিকে এক মাসের ব্যবধানে ব্র্যান্ডভেদে প্রতি কেজি গুঁড়া দুধের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের তুহিন জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মোহম্মদ সাহদাত দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে গুঁড়া দুধের দাম। এক লিটার বোতলজাত তেল ২০৫ টাকা ও ৫ লিটার তেল ১০০০ টাকা।
বাজার করতে কারওয়ান বাজারে এসেছেন মোহম্মদ হাসেম। তিনি বলেন, "যেভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে সেভাবে তো আয় বাড়েনি। সবজির দাম একটু কম হওয়ায় ভাত কম খেয়ে সবজি বেশি খাচ্ছি।"
কারওয়ান বাজারের ইয়াসিন জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা আলি হোসেন বলেন, তেল-চিনির, লবণ কোনটারই দাম কমে নি।
তিনি জানান, ছোট দানার মসুর ডাল ১৩০ টাকা, প্যাকেট আটা ২ কেজি ১১০ টাকা, প্যাকেট ময়দা ২ কেজি ১৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পবিত্র ঈদুল আযহায় পশু কোরবানির বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে যুক্ত মসলার বিষয়টি। তবে এখনও মসলার দাম স্থিতিশীল রয়েছে ।
আলি হোসেন বলেন, "দারচিনি, এলাচসহ অন্যান্য মসলার দাম স্থিতিশীল আছে। আমরা তো আগের মসলাই বিক্রি করতে পারছি না। উচ্চশ্রেণি ছাড়া সবাই এখন কেনা কমিয়ে দিয়েছে। আমাদের বিক্রি কমে গেছে অর্ধেক।"
প্রতি কেজি কেজি আদা ১০০ টাকা, পিঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, রসুন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে বোরোর ভরা মৌসুমেও বাজারে চালের দাম কমে নি।
কারওয়ান বাজারে চালের দোকান সিরাজ এ্যান্ড সন্স এর বিক্রিতা মোহম্মদ মহসিন বলেন, "গত দুই মাসে প্রতি বস্তা চালে দাম বেড়েছে ৪০০ টাকা। এত দাম কখনও বাড়েনি। বিআর-২৮ চাল ৫০ কেজির বস্তা ছিল ২৩০০ টাকা সেটা এখন বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ টাকায়।"
বিআর ২৮ চাল ৫৪ টাকা, সরু চাল হিসেবে পরিচিত নাজির ৫৫ থেকে ৮০ টাকা। মিনিকেট ৬৬ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে।