এবার বেলা বোসকে সিনেমায় আনছেন অঞ্জন
২০১১ সালে গিটার সরিয়ে 'রঞ্জনা'-কে বড়পর্দায় হাজির করেছিলেন পরিচালক অঞ্জন দত্ত। এবার ফের নিজের আরও একটি হিট গানকে ভিত করে ছবি তৈরি করতে চলেছেন অঞ্জন। তবে এবারের চরিত্রটির ব্যাপকতা আরও অনেক বড়। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি ছাড়িয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংগীতপ্রেমী বাঙালির কাছে সেই গান ও চরিত্রটির জনপ্রিয়তা সাতাশ বছর পার করে আজও অমলিন- 'বেলা বোস'।
অঞ্জন দত্তের বেলা বোস। ২৪৪-১১-৩৯ নম্বরের ফোনের ওপারে বসা থাকা সেই বেলা বোসকে এবার বড়পর্দায় দর্শকদের সামনে আনতে চলেছেন স্বয়ং অঞ্জন দত্ত। আর বড়পর্দায় বেলা বোসকে আনার পিছনে মূল ভূমিকায় রয়েছেন এ ছবির প্রযোজক রানা সরকার।
রানা সরকারের উদ্যোগের ফলেই যে বেলা বোসকে বড়পর্দায় আনতে রাজি হয়েছেন অঞ্জন, সেকথা নিজেই জানিয়েছেন বেলার স্রষ্টা। অবশ্য এ ব্যাপারে তার নিজেরও যে বহুদিনের ইচ্ছে এবং তাগিদ ছিল সেকথাও অস্বীকার করেননি এই প্রখ্যাত অভিনেতা-পরিচালক। ছবির নাম 'বেলা বোসের জন্য'।
কিন্তু এই যে এতবড় একটি আইকনিক চরিত্র যিনি বাস করেন নব্বইয়ের দশকের সমস্ত বাঙালির স্বপ্নে এবং কল্পনায়, তাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার এই কাজটা কি ভীষণ চ্যালেঞ্জিং নয়? খুবই কঠিন নয়? কোনও রাখঢাক না করে বেলা বোসের স্রষ্টার জবাব, "ভীষণ কঠিন! তবে চ্যালেঞ্জটা আমি নিচ্ছি। ৬৬ বছর বয়সে এসেও যে এই চ্যালেঞ্জটা নিতে পারছি তার কারণ রানা সঙ্গে আছে বলেই।"
তা ঠিক কেমন হবে এই বেলা বোস? পরিচালকের কথায় জানা গেল 'গায়ক' অঞ্জনের গানে এতদিন বেলাকে যেমন ভেবে এসেছে শ্রোতারা, ছবির বেলায় বেলা সেরকম ন্যাকা একেবারেই নয়। গানে জানা গেছিল প্রেমিক চাকরি পাচ্ছিল না দেখে পরিবারের পছন্দে অন্য জায়গায় বিয়েতে রাজি হয়ে গেছিল সে। ছবিতে মোটেই সে ওরকম নয়। অঞ্জন আরও জানিয়েছেন সোশিও-পলিটিক্যাল প্রেক্ষাপটে বেলাকে সম্পূর্ণ অন্যরকমভাবে হাজির করবেন তিনি। আর হ্যা, এবারেও কিন্তু সেখানে টেলিফোন থাকবে, থাকবে নানান চমক, দাবি বেলার স্রষ্টার! প্রেমও তো থাকবেই তবে তা সম্পূর্ণ নতুন এক মোড়কে পেশ করা হবে দর্শকের কাছে।
কথা প্রসঙ্গে অঞ্জন আরও একবার জানালেন যে, 'বেলা বোস' কাউকে ভেবে তিনি লেখেননি। করোও প্রেমে পড়েও গাননি। তবে?
"দু'টো মানুষের প্রেমের কথা ভেবেই এই গান তৈরি করেছিলাম", কোনও রাখঢাক না করে, বিতর্কের গন্ধ না ছড়িয়ে সাফ কথা তার।
তবে গায়ক-পরিচালকের কাছ থেকে জানা গেল, ২৪৪১১৩৯ নম্বরটা এক খবরের কাগজের অফিসের নম্বর ছিল। সেই কাগজের সম্পাদক রোজ এত ফোন পেতে লাগলেন বেলাকে একটিবার ডেকে দেওয়ার জন্য যে বাধ্য হয়ে রীতিমতো বিরক্ত হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তারা। রেগে গেছিলেন অঞ্জনের বাবাও। বলেছিলেন 'পাবলিক নুইসেন্স অ্যাক্টে' ছেলের শাস্তি হওয়া উচিত। এরপরে ক্ষমাও চেয়েছিলেন অঞ্জন। শেষে ওই ফোন নম্বর চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবারে বেলাকে নিয়ে সেসব 'ভুল' যে আর তিনি করবেন না নিজের মুখে সেই কথা দিলেন তিনি।
এই গানের জন্য বিপুল ভালোবাসা আর প্রশংসা কুড়োনোর পাশাপাশি 'বেলা বোস' সম্পর্কিত আরও একটি ঘটনা দারুণ অবাক করেছিল অঞ্জনকে। একবার এক দম্পতি তাকে দেখতে পেয়ে কাছে এসে জানিয়েছিলেন যে 'বেলা বোস' শুনেই তাদের প্রেম হয়েছে, বিয়েও।
"একটা বিচ্ছেদের গান যে অসংখ্য মানুষের প্রেমের কারণ হতে পারে, দু'টি মানুষকে জুড়ে দেওয়ার কাজ করতে পারে তা দেখে অবাক হয়েছিলাম"। উল্লেখ্য, 'বেলা বোসের জন্য' ছবির সুরকারের দায়িত্বে রয়েছেন নীল দত্ত। তবে খোদ 'বেলা বোস' চরিত্রে কে থাকছেন তা বলতে নারাজ ছবির পরিচালক কিংবা প্রযোজক।