মুখ আসমান: মহামারির দিনগুলোতে এক চিকিৎসকের মর্মস্পর্শী কাহিনি
পুরো করোনাকালে ফন্টলাইনার কারা? এই প্রশ্ন করলে নিশ্চয় সবার আগে নাম আসবে ডাক্তারদের। কিন্তু কখনো কি কেউ ভেবেছেন, ডাক্তারদেরও পরিবার আছে, চাকরির বাইরে একটা জীবন আছে? যে জীবনে প্রেম আছে, দুঃখ আছে, মায়া আছে, ভালোবাসা আছে?
মানুষের সেবা করতে এসে অসহায়ের মতো নিদারুণ অব্যবস্থাপনায় কোনো কোনো ডাক্তার মারা যান। যার শোক কাটিয়ে উঠতে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তার সহকর্মী, বন্ধু, প্রেমিকা!
করোনাকালে ডাক্তারদের জীবনের একটা অংশ পর্দায় তুলে এনেছেন জনপ্রিয় নির্মাতা অনিমেষ আইচ। ওটিটি প্লাটফর্ম বিঞ্জে দেখা যাচ্ছে, 'মুখ আসমান' নামে প্রায় ৪৫ মিনিটের এই স্বল্পদৈর্ঘ্য কাজ। বাঘ বন্দি সিংহ বন্দি সিরিজের ৫টি গল্পের একটি এটি।
'মুখ আসমানে'র প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আশনা হাবিব ভাবনা। তাকে ঘিরেই এগিয়েছে গল্প। তবে তাকে ঘিরে রেখেছে আরও কয়েকটি চরিত্র। বাবার চরিত্রে সোলায়মান খোকা, বোনের চরিত্রে দীপা খন্দকার।
এই গল্পে ভাবনা একজন ডাক্তার। করোনাকালে তাকে নিয়মিত ডিউটি করতে হয়। বাড়িতে না এসে থাকতে হয় ডাক্তারদের জন্য ঠিক করে রাখা নির্দিষ্ট জায়গায়।
প্রতিবাদী, আবার পরিস্থিতির কারণে সবকিছু মেনে নিতে বাধ্য হওয়া একজন দায়িত্বশীল ডাক্তার ভাবনা। যাকে ভালোবাসে তারই এক সহকর্মী। কিন্তু অব্যবস্থাপনায় মারা যায় সেই তরুণ। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে এক সন্তান নিয়ে বাবার সঙ্গে থাকা বোনটাও মারা যায় করোনাতেই। তারপর কি হয় শিশু সন্তানের কিংবা এই তরুণীর?
অনিমেষ আইচ তার প্রতিটি নির্মাণেই একটা ছাপ রেখে যান। এখানেও তাই। একটা চরম বার্তা রেখে দিয়েছেন তিনি। অনেকগুলো মৃত্যু একজন জীবিত মানুষকে কীভাবে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যায়, কীভাবে একজন সুস্থ মানুষ অপ্রকৃতস্থ হয়ে উঠে- তা একেবারে ঠিকঠাক তুলে ধরেছেন ভাবনা, নীতু নামের চরিত্রের মধ্য দিয়ে।
বেদনা, মানবিকতা ও অমানবিকতা হাত ধরাধরি করে চলেছে 'মুখ আসমানে'। করোনাকালে একটা মানবিকতার দালিলিক প্রমাণও হতে পারে কাজটি।