সাংবাদিক রোজিনার বিনা বিচারে জেল ও কিছু প্রশ্ন
রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করেছেন যা ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেই প্রতিবেদনে অসন্তুষ্ট হয়েই থাকেন তাহলে তারা পত্রিকায় প্রতিবাদ ছাপতে পারতেন এবং পত্রিকার বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনতে পারতেন। সেসব কিছুই করা হয় নি।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম গত ১৭ মে তারিখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ৫ ঘন্টা আটক থাকার পর এখন কাশিমপুর কারাগারে একজন অভিযুক্ত আসামী হয়ে আছেন। তিনি কর্মরত অবস্থায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে শারীরিক মানসিক হেনস্থা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই সব ঘটনার কোন তদন্ত ছাড়াই রোজিনাকে পাল্টা আসামী বানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধ্বে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরি ও ছবি তোলার অভিযোগ এনে ১৯২৩ অফিসিয়াল সিক্রেসি এক্ট- ১৯২৩ বা দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইনের ৩ ও ৫ ধারায় এবং পেনাল কোড ৩৭৯ ও ৪১১ তে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, তাকে সচিবালয় থেকে বের করার সময় সাংবাদিকদের হাসপাতালে নেয়ার কথা বলা হয় অর্থাৎ সেই সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাকে একজন চিকিৎসা প্রার্থী রোগী হিসেবেই দেখিয়েছে, কিন্তু তাকে বহন করা গাড়ীটি হাসপাতালে না গিয়ে চলে যায় শাহবাগ থানায়, ডাক্তারের কাছে না গিয়ে পুলিশের কাছে। সেখানেও দীর্ঘ সময় বসিয়ে রাখার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ তাকে রোগী নয় আসামী বানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ৫ ঘন্টা এবং থানায় আরো কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রেখে নির্যাতন করার পর তাকে আসামী বানানো হলো। এর কি কোন আইনী ভিত্তি আছে?
ইতিমধ্যে ঘটনা প্রবাহ যারা সচেতন অনুসরণ করেছেন, সবাই জানেন। সকল ধরণের প্রচার মাধ্যমে এই খবর প্রচারিত হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে এবং রোজিনার পক্ষে ব্যাপক জনমত গড়ে উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, মূলধারার প্রচার মাধ্যমে খবরটি আসতে এতো বেশি সময় লাগল কেন? এই প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোজিনা প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক। ইন্টার্ন কিংবা নতুন ও অপরিচিত কেউ নন। সকলে তাই প্রথম আলোর খবরের ওপর ভরসা করে ছিলেন। কিন্তু ভয়ানক আশাভঙ্গের কারণ হলো, প্রথম আলো নিজেই খবরটি প্রকাশে দেরি করেছে। নিজেদের একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের সুরক্ষা এবং দায়িত্ব নেবার প্রশ্ন নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রথম আলো অবহিত। তাহলে রোজিনা ইসলামের প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই আচরণের তাৎক্ষণিক তীব্র প্রতিবাদ না জানিয়ে প্রথম আলো কেন এর মীমাংসা আইনীভাবে মোকাবিলা করা হবে বলে অবস্থান নিয়েছে।
তবে প্রথম আলোর সাংবাদিকরাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়ে দেন যে রোজিনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটক অবস্থায় আছেন এবং তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছে্ন। এতে ফেসবুকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মূল ধারার প্রচার মাধ্যম শেষ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশ করতে বাধ্য হয়ে পড়ে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং যথাযথ ভুমিকা রেখেছেন তরুণ সংবাদকর্মীরা, তারা সচিবালয়ে ছুটে গেছেন, সারারাত ধরে শাহবাগ থানার সামনে বসে থেকেছেন এবং প্রতিবাদ করেছেন। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রহসনমূলক সংবাদ সম্মেলন যুক্তি সহকারে বয়কট করেছেন। কিন্তু অনুপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতারা, যাদের উপস্থিতি এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকলে হয়তো রোজিনাকে তার আট বছরের সন্তানকে রেখে কাশিমপুর কারাগারে যেতে হত না। মানবিকতার দিক থেকেও এই ঘটনা নিন্দার ভাষা আমাদের নেই।
কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা দরকার, যেমন রিমান্ড চাওয়া। যে কাউকে গ্রেফতার করার পর আদালতে তুলতে হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। রোজিনাকে তার আগেই আদালতে নেয়া হয়েছে। থানা হাজতে ১১ ঘণ্টা রেখে কোন একটি অজ্ঞাত কারণে খুব সকালেই তাকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে রাখা হয়। অথচ আদালত বসেছে ১১টায়। প্রশ্ন তোলা যায় যে আদালতে এত সকালে গোপনে নেওয়ার কারণ কি? পুলিশ কি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন?
আদালতে তুলে রাষ্ট্রপক্ষ ৫ দিনের রিমান্ড আর রোজিনার পক্ষের আইনজীবি তার জামিন চেয়েছিলেন। যে ধারায় তার বিরুদ্ধ্বে মামলা হয়েছে সেটা জামিনযোগ্য। ফলে আদালতের জামিন দিতে সমস্যা হবার কথা নয়। কিন্তু যে কোন মামলা বা যে কোন "অভিযুক্ত" ব্যক্তির ক্ষেত্রেই কি রিমান্ড চাওয়া হতে পারে? রিমান্ড চাওয়ার মূল উদ্দেশ্য অভিযুক্ত আসামীর কাছ থেকে তথ্য বের করা। এর জন্যে এ পর্যন্ত আমরা যা দেখেছি রিমান্ড চাওয়া হয়েছে রাজনৈতিক "আসামীর" ক্ষেত্রে, তথাকথিত জঙ্গী বা বড় ধরণের লুন্ঠনের ক্ষেত্রে। আমরা এও জানি রিমান্ডে যাওয়া মানে নির্যাতন করে বা বল প্রয়োগ করে তথ্য বের করা। একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিকের কাছ থেকে কি তথ্য জানার থাকতে পারে? তিনি যে তথ্য সংগ্রহ করেন তা তিনি তার প্রতিবেদনে লিখেই জনগণকে জানান। তাঁর অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যই থাকে জনস্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে এমন কোন বিষয় থাকলে তার ওপর জনগণ এবং সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করেছেন যা ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেই প্রতিবেদনে অসন্তুষ্ট হয়েই থাকেন তাহলে তারা পত্রিকায় প্রতিবাদ ছাপতে পারতেন এবং পত্রিকার বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনতে পারতেন। একবার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে গেলে সেই প্রতিবেদনের দায় শুধু সাংবাদিকের একার থাকে না, পত্রিকার সম্পাদকেরও থাকে। সেসব কিছুই করা হয় নি। অথচ তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। কেউ কেউ ব্যাখ্যা দিচ্ছেন যে পুলিশের রিমান্ড চাওয়ার উদ্দেশ্য জামিন শুনানি পিছিয়ে দিয়ে রোজিনাকে একটু 'জেলের ভাত খাওয়ানো'। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর না করলেও জামিন শুনানিও করেন নি এবং কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এটা কি বিনা দোষে সাজা দেয়া নয়? রোজিনা এক ঘণ্টার জন্যেও কারাগারে যাওয়ার মতো কোনো দোষ করেছে বলে কোনো প্রমাণ নেই। একে কি বিনা বিচারে কারাদণ্ড বলা যায় না? এটা চরম মানবাধিকারের দিক লংঘন নয় কি?
আদালতে রোজিনাকে নেয়া এবং কাশিমপুর জেলে যাবার জন্যে প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় রোজিনাকে শত শত পুলিশ যেভাবে পরিবেষ্টিত করে রেখেছিল, তা একদিকে হাস্যকর মনে হলেও এটাও ছিল চরম আপত্তিকর কাজ। রোজিনা একজন সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতা করতে গিয়েই তিনি এই ঘটনার শিকার হয়েছেন। তাকে এভাবে পুলিশ পরিবেষ্টিত করে রাখার মধ্যে যে বার্তা দেয়া হয় সেটা হচ্ছে তিনি একজন দাগী আসামী। এবং ভয়ংকর কিছু! এগুলো সবই ছবি তোলা আছে। তার বিচার হলে এই সব বিষয়েরও সুরাহা হতে হবে। প্রিজন ভ্যানের ছবিটিও কষ্টদায়ক। যদিও বলা দরকার যে এর আগেও সাংবাদিকদের এমন হেনস্থা এবং অমর্যাদার শিকার হতে হয়েছে। কয়েকজনকে রিমান্ডে নির্যাতন এবং সাজাও পেতে হয়েছে। কাজেই রোজিনা এক্ষেত্রে প্রথম কিংবা একমাত্র সাংবাদিক নন।
রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায়। রোজিনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষেই বসে ছিলেন, এবং সেখানেই তিনি গুরুত্বপূর্ণ দলিল চুরি করেছেন এবং ছবি তুলেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যখন মামলা দেয় তখন তারা যে ধারা ব্যবহার করেছেন, অর্থাৎ ৩৭৯ ধারা উন্মুক্ত স্থানে চুরি সংঘটিত হলেই প্রযোজ্য হবে। তিনি যেখানে ছিলেন তা একটি ভবন, এখানে চুরি হলে ধারা হবে ৩৮০। এই ধারায় রোজিনার বিরুদ্ধে মামলাই হয় নি। অন্যদিকে রোজিনার আইনজীবি অভিযোগ করেছেন যে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় মামলা করলেও তার কোন উপাদান মামলার এজহারে নেই।
আমরা স্বাস্থ্য মহামারির একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে সময় পার করছি। এই সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্য সব মন্ত্রণালয়ের কাজের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং তা হওয়ারই কথা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দায়িত্বের পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, আমাদের দেশের যতোটুকু সামর্থ আছে তার মধ্যেই কোভিড-১৯ মোকাবেলা আরো একটু ভালভাবে করা যেত। যতটুকু প্রস্তুতি নেয়ার সময় ছিল সেটা নেয়া হয় নি। যন্ত্রপাতি কেনাকাটা থেকে শুরু করে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় চরম অবহেলা এবং অযোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন তারা। কোভিড-১৯ মোকাবেলার জন্যে একটি জাতীয় কারিগরি কমিটি গঠন করা হলেও তাদের পরামর্শ পাশ কাটিয়ে অন্য ভাবে সিদ্ধ্বান্ত গ্রহণ করা হয় বলেও অভিযোগ শোনা যায়। ভ্যাক্সিন নিয়েও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে লুকোচুরি খেলছেন তা মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলার শামিল। ভারত থেকে প্রতিশ্রুত সংখ্যক ভ্যাক্সিন আসছে না, অন্য দেশের সাথেও চুক্তি হচ্ছে। কবে আসবে জানা নেই। এই সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত নিয়মিত ব্রিফিং করা। শুধু কত জন আক্রান্ত হলো, কত জন মারা গেল জেনে খুব কাজ হচ্ছে না। মানুষ জানতে চায় ভ্যাকসিন আসবে কিনা, যদি আসে তাহলে কোনটা আসবে, করোনা আক্রান্ত হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা কি ইত্যাদি। তাই এই সময় অনুসন্ধানী সাংবাদিক বা যারা স্বাস্থ্য সংবাদ বিট করেন তাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে অতিমারি বা মহামারি মোকাবিলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মন্ত্রণালয় এবং সরকারকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার তথ্য হাজির করেন। সেই ক্ষেত্রে এযাবত কাল রোজিনা ইসলাম যেসব প্রতিবেদন ছেপেছেন তার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সরকার উপকৃত হবার কথা। কারণ রোজিনা এখানে যেসব অনিয়ম দেখেছেন, তাই লিখেছিলেন। আর এটা তো ঠিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ ভয়ানকভাবে আমলা নির্ভর হয়ে গেছে, যা জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সুখকর নয়।
রোজিনার বিরুদ্ধে দলিল চুরির যে অভিযোগ উঠেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ধারণা দিচ্ছেন তা ভ্যাকসিন সংক্রান্ত। তাই যদি হয়, একটি প্রশ্ন সবাই করছেন এমন গুরুত্বপূর্ণ দলিল সচিবের রুমে না রেখে একান্ত সচিবের রুমেই বা খোলা অবস্থায় কিংবা অন্য কেউ দেখতে পারে এমন অবস্থায় ছিলই বা কেন? ভ্যাকসিন সংক্রান্ত দলিল হলে তাতে কী এমন তথ্য ছিল যা জনগণ জানলে রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হবে? এই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে এই কারণে যে রাষ্ট্র তো জনগণের জন্যেই। ভ্যাকসিনের মতো জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি বিষয় সংক্রান্ত চুক্তি বা লেনদেন সম্পর্কে জনগণকে না জানাবার কি কারণ থাকতে পারে? তাহলে এই সব চুক্তি ত্রুটিপূর্ণ বলেই ধরে নিতে হবে। আমরা আশা করবো, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিজেই এই বিষয়টি জনগণের কাছে পরিষ্কার করবেন।
সবশেষে বলছি, রোজিনাকে আমি "নারী" সাংবাদিক আখ্যায়িত করতে চাই না, এবং সে কারণে বিশেষ সুবিধা দেয়ার দাবীও করছি না। যদিও বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকরা অনেক সংগ্রাম করে টিকে আছেন। এখনও তাদের সংখ্যা প্রিন্ট মিডিয়াতে মাত্র ৫% এবং ব্রডকাস্ট মিডিয়াতে মাত্র ২৫%। ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী জাতীয় প্রেস ক্লাবে মোট সদস্য সংখ্যা ১২৫২, তার মধ্যে মাত্র ৭৪ জন নারী সাংবাদিক আছেন। বর্তমান প্রেসক্লাব সভাপতি একজন নারী। এর মধ্যে নারী সাংবাদিকদের মাত্র কয়েকজন সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের টিকে থাকার সংগ্রাম করতে হয়। রোজিনা নিজের কাজের গুণে তার যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছে্ন। একটু অবাক হয়েছি যে রোজিনার বিষয়ে রিপোর্টারদের (নারী ও পুরুষ) যেভাবে অংশগ্রহণ দেখেছি নারী সাংবাদিক ফোরামের নেত্রীদের ভূমিকা অনুচ্চ, তাদের উচ্চস্বর একদমই শোনা যায়নি। তাদের কাউকে দেখা যায়নি শাহবাগ থানায় ছুটে যেতে। যদিও প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনসহ একটি দল রোজিনা জেলে যাবার পর, আইনমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীদের সাথে দেখা করে তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, রোজিনার ওপর এই আক্রমণ করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এতো সহজ হলো কেন? তিনি একজন নারী বলেই কি?
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বুঝতে হবে বিচার শুধু আদালতেই হয় না। তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য জনগণের সামনে তারা নিজেরাই আসামী হয়ে হাজির হয়েছেন। সেই বিচারও চলবে।