‘পুতিনকে মাঝে মাঝেই পাঠ করুন, মনোযোগ দিয়ে’
গতকাল শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেছেন, রুশ ভুখণ্ডের সুরক্ষায় যেকোনো উপায় (পরমাণু অস্ত্রের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে) গ্রহণ করবে মস্কো।
ক্রেমলিন যখন অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে গণভোট অনুষ্ঠান করছে এবং তার মাধ্যমে রাশিয়ান ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে– তখনই একথা বলেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তার বক্তব্য গত বুধবার দেওয়া পুতিনের ভাষণকে প্রতিধ্বনিত করেছে।
অধিবেশন শেষে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের প্রশ্নের তোড়ে পড়েন ল্যাভরভ। মস্কোর উদ্দেশ্য ও নীতির ব্যাখ্যা না করে তিনি সাংবাদিকদের দেন সাধারণ অথচ গুরুত্বপূর্ণ এক উপদেশ। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বক্তব্য ও সিদ্ধান্তকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনার পরামর্শ দেন তিনি।
ল্যাভরভ বলেন, 'পুতিনকে আরও মনোযোগ দিয়ে বুঝতে ও জানতে হবে'। এর মাধ্যমেই ইউক্রেন যুদ্ধের পরিণতি আর রাশিয়ার কৌশল বোঝা সম্ভব হবে বলে দিকনির্দেশনা দেন।
সাংবাদিকরা বার বার ল্যাভরভকে জিজ্ঞাসা করেন, ইউক্রেনে রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে কিনা– সরাসরি যার উত্তর দেননি তিনি।
এর আগে রুশ ভূখণ্ড ও স্বাধীন অঞ্চল (ইউক্রেনের দখলীকৃত ভূখণ্ড) রক্ষায় মস্কো 'যেকোনো উপায়' গ্রহণ করবে বলে উল্লেখ করেন পুতিন। এতে পরমাণু যুদ্ধের ইঙ্গিত থাকায় তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলি।
এছাড়া, দখলীকৃত অঞ্চলে ক্রেমলিনের গণভোট আয়োজনকে 'অবৈধ' বলে নাকচ করেছে জাতিসংঘ।
ক্রেমলিন তাতে পিছিয়ে আসেনি। বরং দেশটির সরকারি বার্তাসংস্থা জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ নাগাদ এসব এলাকাকে রাশিয়ান ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
তাই স্বভাবতই যুদ্ধ চলমান এসব এলাকা রক্ষায় রাশিয়া কতদূর যেতে পারে সাংবাদিকরা সেটি স্পষ্ট করার অনুরোধ করেন ল্যাভরভকে।
জবাবে তিনি, পশ্চিমাদের নানান অভিযোগকে প্রথমে নাকচ করেন। এরপর বলেন, 'রুশ সংবিধানের আওতায় থাকা এবং ভবিষ্যতে এর আওতায় আসবে– রাশিয়ান ফেডারেশনের এমন সকল ভূখণ্ড অবধারিতভাবে রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা পাবে'।
ল্যাভরভ আরও বলেন, 'রাশিয়ান ফেডারেশনের সকল আইন, নীতি, আদর্শ ও কৌশলের অন্তর্ভুক্ত এর সমগ্র ভূখণ্ড'।
রাশিয়া পশ্চিমাদের সাথে আলোচনা চায়, তবে নিজে থেকে এ উদ্যোগ আর নেবে না বলে জানান তিনি। '(কূটনৈতিক সমাধানের জন্য) কথা না বলার চেয়ে বলাটাই ভালো। কিন্তু, আমাদের যে পরিস্থিতির মধ্যে ফেলা হয়েছে, তাতে করে রাশিয়া (আলোচনার) প্রথম পদক্ষেপ নেবে না'।
জাতিসংঘে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী সংবাদ সম্মেলন করেন ল্যাভরভ। এসময় তিনি আমেরিকা (যুক্তরাষ্ট্র) ও তার মিত্রদের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ