ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে কয়েক মাস লাগতে পারে, স্বীকার করলেন ট্রাম্পের উপদেষ্টারা
ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে কয়েক মাস বা তার-ও বেশি সময় লাগতে পারে বলে স্বীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টারা। আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন ট্রাম্প। দায়িত্ব নেওয়ার প্রথমদিনেই একটি শান্তিচুক্তি করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি নির্বাচনী প্রচারের সময়ে। তবে বাস্তবতা যে আরও কঠিন সেটি এখন মানছেন তাঁর উপদেষ্টারা।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ দুই সহযোগী বার্তাসংস্থা রয়টার্সের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেছেন। তাঁরা মনে করছেন, এই সংঘাতের ইতি টানতে কয়েক মাস লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে ট্রাম্পের দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে তাঁরা নির্বাচনী প্রচারের অত্যুক্তি বলে মন্তব্য করেন। এছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধের অনির্দিষ্ট গতিপ্রকৃতি এবং নতুন প্রশাসন পুরোপুরি সক্ষম হতে বেশ কিছুটা সময় লাগার কারণেও এই দেরী হবে তাঁরা উল্লেখ করেন।
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরে তাঁর রাশিয়া-ইউক্রেন বিষয়ক দূত হবেন সাবেক লে. জেনারেল কিথ কেলোগ। কিছুদিন আগে তিনিও বলেছেন একই কথা। গত সপ্তাহে মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় কেলোগ বলেন, তিনি ১০০ দিনের মধ্যে এই যুদ্ধের একটি 'সমাধান' করতে চান, যা ট্রাম্পের উল্লেখ করা সময়সীমার চেয়ে অনেকটাই বেশি।
ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং বর্তমানে থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আটলান্টিক কাউন্সিলের বিশেষজ্ঞ জন হার্স্ট বলেন, এমনকী কেলোগ-ও মনে করেন ওই সময়সীমা 'খুব, খুব আশাবাদী।'
তিনি বলেন, 'এটা কার্যকর হওয়ার জন্য, ট্রাম্পকে পুতিনকে বোঝাতে হবে যে, আপোষ-বিমুখ হলে নেতিবাচক পরিণাম হবে।'
গত বছরের ৫ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকে ট্রাম্প অন্তত ডজনখানেক বার উল্লেখ করেছেন যে, তিনি হোয়াইট হাইসে প্রবেশ করার দিনই ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি হবে, এমনকী তাঁর আগেও হতে পারে। তবে গত অক্টোবরে এই বয়ান কিছুটা পরিবর্তন করে বলেন, এটা 'খুব দ্রুতই' হবে।
তবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এই ভাষ্য থেকে আরও পিছু হটছেন ট্রাম্প। মাঝমধ্যেই তিনি বলছেন, তিনি এই 'সংঘাতের' সমাধান করবেন, তবে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা আর উল্লেখ করছেন না। অবশ্য ট্রাম্প স্বীকার করেছেন যে, গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকরের চেয়েউ কঠিন হবে ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানা।
গত বছরের ডিসেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে গাজায় যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতিই হবে বেশি জটিল। আমার কাছে এটা বেশি কঠিন মনে হয়।
তাছাড়া, শান্তিচুক্তির বিষয়ে রাশিয়াও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। মস্কো ট্রাম্পের বক্তব্যকে স্বাগত জানালেও — ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের দেওয়া কিছু পরামর্শকে অকার্যকর বলে নাকচ করে দিয়েছে।