হিজাব বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া অভিনেত্রীদের নিষিদ্ধ করলো ইরান
মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে হিজাব বিরোধী আন্দোলনে ইরানের যেসব অভিনেত্রী রাজপথে নেমে এসেছেন এবং প্রকাশ্যে হিজাব ত্যাগ করেছেন, তাদেরকে অভিনয়ে নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন ইরানের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোহাম্মদ মেহদি ইসমাইলি।
শনিবার ইসমাইলি বলেন," ইরানের আইন অনুযায়ী হিজাব বাধ্যতামূলক এবং যেসব অভিনেত্রী হিজাব ত্যাগ করে এই আইন না মানার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না।"
কেউ যদি ইসলামী প্রজাতন্ত্রের আইন না মানতে চায়, তাহলে সরকার কাউকে জোর করবে না উল্লেখ করে সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেন, "ওইসব অভিনেত্রীরা অন্যান্য চাকরি করতে পারবেন।"
শনিবার ১০০ ইরানী অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা এক বিবৃতির মাধ্যমে দেশের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র নামিয়ে রেখে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। এর পরপরই অভিনেত্রীদের নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত আসে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে।
বিবৃতিতে অভিনেতা-নির্মাতারা লেখেন, "সেনাবাহিনীর যারাই সাধারণ মানুষকে নির্যাতন ও শোষণ করছেন, তাদেরকে আরও একবার আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই যে এসব অস্ত্র দেশের জনগণের টাকায় এবং দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কেনা। ইরানের তরুণদের দিকে, সাধারণ মানুষের দিকে বন্দুক তাক করবেন না।"
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের রাজধানী তেহরানে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে ইরানের মোরাল পুলিশ। আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তিনি অচেতন হয়ে যান। তিনদিন কোমায় থাকার পর গত শুক্রবার তার মৃত্যু হয়।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে হাজার হাজার ইরানী নারী রাস্তায় নেমে আসেন। তারা হিজাব পুড়িয়ে এবং নিজের মাথার চুল কেটে ফেলে প্রতিবাদ করেন।
তবে মাহসা আমিনির মৃত্যুর আগেও ইরানের বিভিন্ন আন্দোলনে সেনাবাহিনীর ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার পর স্বাক্ষরকারীদের স্বাক্ষর সরিয়ে নিতে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করেছিল দেশটির সেনাবাহিনী।
আন্দোলন চলাকালীন সেনাবাহিনী 'জনগণের উপর নির্যাতন চালানোর হাতিয়ার' হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে গত মে মাসে 'অস্ত্র নামিয়ে নিন' শিরোনামের ওই বিবৃতি দেন ইরানের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির ১০০ ব্যক্তি। তারা সেনাবাহিনীকে জনগণের ওপর শোষণ না চালানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন বিবৃতিতে।
সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল