ভারতে শহরের তুলনায় গ্রামে ‘অতি ধনী’ বাড়ছে দ্রুতহারে
চলতি দশকের শেষে ভারতে 'অতি ধনী' পরিবারের সংখ্যা বাড়বে পাঁচ গুণ। যেখানে বড় অংশ থাকবে গ্রামীণ এলাকা থেকে। পিপলস রিসার্চ অন ইন্ডিয়াজ কনজিউমার ইকোনমি অ্যান্ড ইন্ডিয়াজ সিটিজেন এনভায়রনমেন্ট (প্রাইস)-এর এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার (৫ জুলাই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, অতি ধনী অর্থাৎ বছরে দুই কোটি রুপি আয় করা পরিবারের সংখ্যা ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে দ্বিগুণ হয়ে ১৮ লাখে পৌঁছেছে। শহরে এ ধরনের পরিবারের সংখ্যা বেড়েছে ১০.৬ শতাংশ। যেখানে গ্রামে বেড়েছে ১৪.২ শতাংশ।
২৫ রাজ্যের ৪০ হাজারে বেশি মানুষের মধ্যে করা জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গ্রামীণ এলাকায় দ্রুত বৃদ্ধির কারণে ২০৩১ সালের মধ্যে নতুন করে 'অতি ধনী' তালিকা যুক্ত হবে আরও নয় লাখের বেশি পরিবার।
সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী ও এই গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক রাজেশ শুক্লা বলেন, গ্রামীণ এলাকায় মানুষ ক্রমবর্ধমানভাবে বাণিজ্যিক কৃষির পাশাপাশি অন্যান্য পেশাও বেছে নিচ্ছেন। অনেক উদ্যোক্তারা গ্রামীণ এলাকায় কার্যক্রম জোরদার করেছেন। সেখানে চাকরির বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং ছোট ছোট ব্যবসা গড়ে উঠছে। এতে অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী সম্পদ ব্যবস্থাপক এবং বিদেশি ব্যাংকগুলো ভারতে তাদের কার্যক্রম বাড়াচ্ছে। কারণ দেশটিতে কোটিপতির সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল-এর অনুমান, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দৈনিক ৭০ জন নতুন কোটিপতি পেয়েছে ভারত। দ্রুত বর্ধমান এই ভোক্তা-বাজারে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও আলোকপাত করেছে।
ভারতে বিলাসবহুল গাড়ির পেছনে ও বিদেশে ছুটি কাটিয়ে অর্থ ব্যয় করা মধ্যবিত্তের সংখ্যাও বাড়ছে। এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তর অর্থনীতির এই দেশে গৌতম আদানির মতো ধনকুবেরদের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। বিষয়গুলো দেশের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে সামনে আনছে। একইসঙ্গে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যকেও তুলে ধরছে।
সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, দেশটিতে মধ্যবিত্তের সংখ্যা বর্তমানে ৪৩ কোটি। যারা বছরে পাঁচ থেকে ৩০ লাখ রুপি পর্যন্ত আয় করে। এ শ্রেণিটি সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ২০৩১ সালে মধ্যবিত্তের সংখ্যা হতে পারে ৭১ কোটির বেশি। ২০৩১ সালে বছরে দেড় লাখ রুপির কম আয় করা হতদরিদ্রের সংখ্যা কমে আট কোটিতে নামবে।
শুক্লা বলেন, 'আমরা এখনও উচ্চাকাঙ্ক্ষী দেশগুলোর একটি। তবে দ্রুত একটি প্রকৃত মধ্যবিত্ত পরিবারের সমাজের দিকে অগ্রসর হচ্ছি।'