জার্মানিতে সিয়েস্তা? দুপুরে ঘুমানোর পরামর্শ চিকিৎসকদের
বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাবে গরমের সময়টায় মানুষের কর্মক্ষমতা যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, তার জন্য 'সিয়েস্তা' বা 'মিড-ডে ন্যাপ' নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জার্মানির চিকিৎসকরা।
'সিয়েস্তা' একটি স্প্যানিশ শব্দ; দিনের সবচেয়ে গরমের সময়টায়, দুপুরে বা বিকালের দিকে স্বল্প সময় বিশ্রাম বা ঘুমানোকে সিয়েস্তা বলা হয়। বিশ্বের যেসব অঞ্চলে গরম বেশি, সেসব দেশে দুপুরবেলা ঘুমের প্রচলন রয়েছে।
ফেডারেল অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ানস অব জার্মান পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট-এর প্রধান জোহানেস নিসেন বলেন, "দক্ষিণের দেশগুলোতে লোকেরা কিভাবে কাজ করে সেদিকে আমাদের লক্ষ্য করা উচিত- খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠা, সকালের দিকে ভালোভাবে কাজ করা এবং দুপুরের দিকে কিছুক্ষণ ঘুমানো। গ্রীষ্মকালীন মাসগুলোতে আমাদেরও এই নিয়ম অনুসরণ করা উচিত।"
জার্মানদের কেন 'সিয়েস্তা' প্রয়োজন?
ফেডারেল অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ানস অব জার্মান পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট-এর চিকিৎসকরা আহ্বান জানিয়েছেন, দিনের যে সময়টায় সবচেয়ে বেশি কাজের চাপ থাকে তা যেন সকালের দিকে সরিয়ে আনা হয়; তা নাহলে কর্মীরা প্রচণ্ড গরমের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
ডা. নিসেন বলেন, "মানুষ স্বাভাবিক সময়ে যতটা কর্মক্ষম থাকে, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সেটা সম্ভব হয় না। রাতেরবেলা গরম আবহাওয়ার কারণে ভালো ঘুম হয় না এবং এর ফলে দিনেরবেলা কাজে মনোযোগ দিতে সমস্যা হয়।"
বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্পেন, ইতালি ও গ্রিসের মতো দেশগুলো যখন পরপর তাপপ্রবাহ ও প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ার মুখোমুখি হচ্ছে, এমতাবস্থায় জার্মানিতে সময় অনুযায়ী কাজের ধরন পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জার্মান নিয়োগকর্তারা প্রচণ্ড তাপমাত্রার ফলে সৃষ্ট ঝুঁকিকে 'অগ্রাহ্য' করছেন
ডা. নিসেন জার্মানির অফিসগুলোতে 'পর্যাপ্ত ফ্যান এবং কর্মীদের হালকা-পাতলা পোশাক পরিধানের আহ্বান জানিয়েছেন, এমনকি অফিসের ড্রেসকোড তা অনুমোদন না করলেও।'
এছাড়াও, কর্মজীবীদের ও সাধারণ জনগণকে দৈনিক প্রচুর পানি পান করতে হবে এবং দিনের বিভিন্ন সময়ে অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে, বলেন ডা. নিসেন।
তিনি বলেন, "বাড়িতে বসে কাজ করলে ডেস্কের নিচে কোল্ড ফুটবাথ রাখা নিজেকে শীতল রাখার একটা উপায় হতে পারে।"
জার্মান ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন (ডিজিবি)-এর একজন বোর্ড সদস্য আনইয়া পিল গণমাধ্যমকে বলেন, প্রচণ্ড গরমের প্রভাব থেকে কর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে নিয়োগকর্তাদের অবশ্যই গ্রীষ্মকালীন মাসগুলোতে কি কি ঝুঁকি রয়েছে তা চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
"গরমের মধ্যে কাজ করা কর্মীদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, এমনকি তাদের স্বাস্থ্যের মারাত্বক ক্ষতিও হতে পারে", বলেন পিল।
তিনি আরও যোগ করেন, জার্মান নিয়োগকর্তাদের 'অবহেলার কারণে' তারা জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রচণ্ড গরম মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে ব্যর্থ হয়েছে।