জাপান-বাংলাদেশ হয়ে উত্তর কোরিয়ায় বিলাসবহুল গাড়ি নিতে চেয়েছিলেন কিম জং উন!
জাপানের চিবাতে পুরনো গাড়ির একটি ডিলারশিপে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উত্তর কোরিয়াতে লেক্সাস ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি বাংলাদেশ হয়ে অবৈধভাবে পাচারের চেষ্টা করছিলেন তারা।
জাপানের সংবাদপত্র আশাহি শিম্বুন গত বৃহস্পতিবার অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে সর্বপ্রথম সংবাদ প্রকাশ করে। আর দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদপত্র কোরিয়া জুংআং ডেইলি জানায়, কর্মকর্তারা শুল্ক বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের প্রমাণ খুঁজছেন।
জাপান পুলিশের ধারণা মতে, গাড়িটির গন্তব্যস্থল সিঙ্গাপুরের কথা বলে বরং সেটি বাংলাদেশ হয়ে উত্তর কোরিয়ায় পৌঁছানোর পরিকল্পনা ছিল।
এদিকে উত্তর কোরিয়ার শাসক পরিবারের ওপর বিশেষজ্ঞ ও টোকিওর ওয়াসেদা ইউনিভার্সটির প্রফেসর তোশিমিতসু শিগেমুরা বিষয়টি নিয়ে দিয়েছেন এক চাঞ্চল্যকর মতামত। হংকং-ভিত্তিক গণমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে তিনি জানান, "গাড়িটির সম্ভাব্য ক্রেতা ছিলেন কিম জং উন!"
তোশিমিতসু শিগেমুরা বলেন, "কিমের দামি গাড়ির প্রতি বেশ ঝোঁক রয়েছে। তাকে মার্সিডিজ, রোলস-রয়েসের মতো আরও দামি দামি ব্র্যান্ডের গাড়িসহ দেখা গিয়েছে।"
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এনকে নিউজ জানায়, কিমকে গত মাসে উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলে বিলাসবহুল মেবাচ এবং লেক্সাস ব্র্যান্ডের বেশ কয়েকটি স্পোর্টস ইউটিলিটি কার ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
তবে গাড়িগুলো ঠিক কীভাবে উত্তর কোরিয়ায় পৌঁছেছে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি এনকে নিউজ। তবে এক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার যে লঙ্ঘন হয়েছে, সেটা নিশ্চিত।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ২০০৬ সালে পারমাণবিক কর্মসূচীর জের ধরে উত্তর কোরিয়ার উপর বেশ কয়েকটি বড় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তাই রেজুলেশন অনুযায়ী দেশটিতে দামি গাড়ি ও অন্যান্য উচ্চমূল্যের জিনিসপত্র রপ্তানি করা নিষিদ্ধ।
শিগেমুরা বলেন, "এটা স্পষ্ট যে, কিম জং উন বিলাসবহুল গাড়িগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের প্রতিপত্তি ও গুরুত্ব প্রদর্শন করতে চান। মৌলিকভাবে চিন্তা করলে, এটি অনেকটা স্ট্যাটাস সিম্বল।"
টেম্পল ইউনিভার্সিটির টোকিও ক্যাম্পাসের ইনস্টিটিউট অফ কনটেম্পরারি এশিয়ান স্টাডিজের সহ-পরিচালক রবার্ট ডুজারিক মনে করেন, উত্তর কোরিয়ায় একটি বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করা 'অপেক্ষাকৃত সহজ'।
ডুজারিক বলেন, "এটা একটি বিলাসবহুল গাড়ি হতে পারে। কিন্তু বিশ্বের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে পিয়ংইয়ং-এ গাড়িগুলো যেতে না দেওয়ার চেষ্টা করার চেয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে।"
ডুজারিক আরও বলেন, "ইউরোপ বা এশিয়ায় কোনো গাড়ি ল্যাক্স রেগুলেশনের মাধ্যমে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানো হতে পারে। তারপর সেটি সহজেই উত্তর কোরিয়ায় পাঠানো যায়। তাই গোয়েন্দা এজেন্সিগুলো বরং সামরিক সরঞ্জাম ব্লক করার দিকে মনোনিবেশ করে।"
বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যের জন্য বিজনেস ইনসাইডারের পক্ষ থেকে লন্ডনে অবস্থিত উত্তর কোরিয়ান অ্যাম্বাসিতে যোগাযোগ করা হয়। তবে সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।