ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় আজ রায় দেবে আইসিজে
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সাময়িকভাবে বন্ধের জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আজ (শনিবার) রায় দেবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।
সংস্থাটির এক্স অ্যাকাউন্টে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। রায়টি হবে স্থানীয় সময় দুপুর ১টায়।
এর আগে অবশ্য আইসিজে-তে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সেখানে তেল আবিবের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ আনে দেশটি।
মামলায় শুনানি শুরু হয় গত ১১ জানুয়ারি। যদিও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগকে মিথ্যা আখ্যায়িত করে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, দক্ষিণ আফ্রিকা 'ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ধ্বংসের' আহ্বান জানাচ্ছে। একইসাথে দেশটির গণহত্যার দাবির 'বাস্তব ও আইনগত ভিত্তি' উভয়ই নেই বলে মন্তব্য করেছে দেশটি।
অন্যদিকে আইসিজে-কে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে গাজায় ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে 'আসন্ন অপূরণীয় ক্ষতির হাত থেকে' রক্ষা করার জন্য 'অস্থায়ী ব্যবস্থা' গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
ইসরায়েল ১৯৪৮ সালে গণহত্যার বিরুদ্ধে যে কনভেনশন হয়েছে সেটির স্বাক্ষরকারী দেশ। এতে গণহত্যাকে স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলিকে এটি প্রতিরোধে বাধ্য করার কথা বলা হয়েছে।
আইসিজে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত। নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে এটি অবস্থিত। এর রায়গুলি তাত্ত্বিকভাবে আদালতের পক্ষগুলির জন্য আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক; যার সদস্য হিসেবে রয়েছে ইসরায়েল ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে আদালত এটি পালন করতে দেশগুলোকে বাধ্য করতে পারে না৷
২০২২ সালে আদালতটির পক্ষ থেকে রাশিয়ায় প্রতি ইউক্রেনে অতিসত্বর সামরিক কার্যক্রম বন্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটিকে তোয়াক্কা করেনি মস্কো।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) এর মতো আইসিজে গণহত্যার অপরাধের জন্য ব্যক্তিদের বিচার করতে পারে না। তবে এর মতামত জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার হাইকোর্টের আইনজীবী টেম্বেকা এনগকুকাইতোবি আইসিজে-এর আদালতে বলেন যে, "সামরিক হামলা চালানোর ধরণ দেখেই ইসরায়েলের 'গণহত্যার অভিপ্রায়' সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে গাজাকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রটির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে গ্রহণ করা হয়েছে।"
যদিও গাজায় সামরিক হামালাকে প্রথম থেকেই 'যুক্তিযুক্ত' বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল। তেল আবিবের দাবি, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে এই আক্রমণ করছে দেশটি।
এই বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনমন্ত্রী রোনান্ড ল্যামোলা বলেন, "কোনো আক্রমণই 'জেনোসাইড কনভেনশন' লঙ্ঘনের ন্যায্যতা দিতে পারে না বা রক্ষা করতে পারে না।"