উত্তর রাখাইনে পরাজয়ের মুখে সেনা প্রত্যাহার করছে জান্তা, দাবি আরাকান আর্মির
মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি জানিয়েছে, দেশটির জান্তা বাহিনী রাখাইনের উত্তরাঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করছে। একইসঙ্গে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে জেনে তারা দক্ষিণে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা বাড়িয়েছে।
রবিবার রাখাইন রাজ্যের মিয়েবন টাউনশিপে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত দুটি ঘাঁটি থেকে জান্তা বাহিনী হেলিকপ্টারে করে সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার পর আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, জান্তার সামরিক বাহিনী নিশ্চিত যে তারা আমাদের প্রতিহত করতে চাইলে হেরে যাবে। তাই আমরা যে টাউনশিপগুলো দখল নেওয়ার চেষ্টা করছি, সেগুলোর সামরিক ফাঁড়ি পুড়িয়ে দিয়ে তারা সৈন্য প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
আরাকান আর্মি জানায়, রবিবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মিয়েবনে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত পয়েন্ট ৪০২ ও ৪০৮ ফাঁড়ির অস্ত্র, গোলাবারুদ ও কামান ধ্বংস করেছে। তারা সঙ্গে করে কেবল যে কয়টি বহন করা যায়, সেই কয়টি অস্ত্রই নিয়ে গেছে। ফাঁড়ি দুটি হিন খা র গ্রাম থেকে তিন কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত।
জান্তা সৈন্যদের হেলিকপ্টারে করে ফাঁড়িগুলো থেকে সরিয়ে দক্ষিণ রাখাইনের অ্যান টাউনশিপে জান্তার ওয়েস্টার্ন কমান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে দক্ষিণ রাখাইনের রামরি টাউনশিপে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে বোমা বর্ষণ অব্যাহত রেখেছে জান্তা বাহিনী।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জান্তার গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলায় ৪ নম্বর কিং টেই ওয়ার্ডের অন্তত দেড়শ বাড়ি পুড়ে গেছে। পরদিন রবিবার থাইম টং প্যাগোডা পাহাড় থেকে রামরি টাউনে গোলা হামলা চালায় তারা।
ইরাবতীর খবরে আরও বলা হয়, সপ্তাহজুড়েই রাজ্যের বিভিন্ন শহরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। তবে গত সপ্তাহের মতো বড় ধরনের কোনো সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘাঁটি ও ফাঁড়িতে থাকা জান্তা বাহিনীর সদস্যরা আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত এগুলোতে হামলা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে আরাকান আর্মি।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, 'জান্তার সামরিক বাহিনী এখনও রাখাইন রাজ্যে তার ব্যর্থতার বাস্তবতাকে মেনে নিতে পারে না।'
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের শাসন ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এর পর জান্তার সঙ্গে আরাকান আর্মির একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। গত বছরের নভেম্বরে এ যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। এখন রাখাইনে জান্তা সরকারের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তু দখলে নিতে এগোচ্ছে বিদ্রোহীরা।
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক