এটা বেশ কৌতূহলের বিষয়, যুক্তরাষ্ট্র এখন আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে চাইছে: রাশিয়া
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং হামাসের শীর্ষ তিন নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন। জায়নবাদী রাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপে ক্ষুদ্ধ ইসরায়েলের একনিষ্ঠ সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা। তাঁদের অনেকেই আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলছেন।
এই প্রেক্ষাপটে আজ মঙ্গলবার (২১ মে) ক্রেমলিন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র মনে হয় আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতেও প্রস্তুত। এটা ভীষণ কৌতূহল উদ্দীপক।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, "এমনকী আইসিসির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্রের যে আগ্রহ ও মনোভাব দেখা যাচ্ছে, তাতে সার্বিক পরিস্থিতি ভীষণ কৌতূহলের উদ্রেক করছে।"
গাজায় ইসরায়েলের সাত মাসের বেশি সময় ধরে পরিচালিত বর্বরতার পরে আইসিসির কৌঁসুলি করিম খান গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে জানান, তিনি মনে করছেন গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে– এমনটা মনে করার যৌক্তিক ভিত্তি রয়েছে।
এজন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং হামাসের শীর্ষ তিন নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার, মোহাম্মদ দেইফ এবং ইসমাইল হানিয়ের বিরুদ্ধে গেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছে।
করিম খানের এই আইনি পদক্ষেপকে "দুঃসাহসী" বলে তীব্র নিন্দা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিডেন্ট জো বাইডেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, এতে জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আলোচনা পণ্ড হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল সমর্থক কিছু আইনপ্রণেতা আন্তর্জাতিক এই আদালতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে ২০২০ সালেও একজন আইসিসি কৌঁসুলির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে গত বছরের মার্চে করিম খানের আবেদনের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি।
রাশিয়ার দাবি, বিশ্বে রাশিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে অন্যায্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা একেবারেই অর্থহীন। রুশ সরকার ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের সকল অভিযোগই অস্বীকার করেছে।
রাশিয়া অবশ্যই যুদ্ধাপরাধ করেছে, ইউক্রেন এমন দাবি করলেও – মস্কোর পাল্টা যুক্তি হচ্ছে, যুদ্ধকালীন সময়ে ইউক্রেনের যুদ্ধাপরাধগুলোকে গণ্যই করেনি পশ্চিমারা।
পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিকে "ন্যায্য" বলে গত বছর বাইডেন মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর প্রশাসনসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই দলের রাজনীতিবিদরাই এখন আন্তর্জাতিক আইনের আওতা থেকে নেতানিয়াহুকে রক্ষায় সরব হয়েছে।
অনুবাদ: নূর মাজিদ