‘শরীরে গন্ধ’, এ অভিযোগে কৃষ্ণাঙ্গ যাত্রীদের প্লেন থেকে নামিয়ে দেয়া এয়ারলাইন্স কর্মী বহিষ্কার
শরীরে গন্ধ আছে এমন অভিযোগ এনে ইউএস এয়ারলাইন্সের (আমেরিকান এয়ারলাইন্স) ৫ জানুয়ারির ফিনিক্স, অ্যারিজোনা থেকে নিউইয়র্কগামী ফ্লাইট থেকে আটজন কৃষ্ণাঙ্গ যাত্রীদের নামিয়ে দেয়ার ঘটনায় এয়ারলাইন্সটির কয়েকজন কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত মে মাসে ভুক্তভোগীদের মধ্যে অ্যালভিন জ্যাকসন, ইমানুয়েল জিন জোসেফ এবং জেভিয়ার ভেল নামের তিন যাত্রী বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ এনে ইউএস এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছিলেন, তারা বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছেন। তারা কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার জন্যই ইউএস এয়ারলাইন্স এমনটি করেছে এবং এর জন্য তারা বিব্রত ও অপমানিত হয়েছেন।
তারা জানিয়েছিলেন, গায়ে দুর্গন্ধের কথা বলে ফ্লাইট থেকে যাদেরকে নামানো হয়েছে তারা সবাই কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন। তারা প্রত্যেকেই আলাদা সিটে বসেছিলেন এবং তাদের একজনের সাথে আরেকজনের আগে থেকেই কোন পরিচয় ছিল না।
ইউএস এয়ারলাইন্সের সিইও রবার্ট ইসম ঘটনাটি অগ্রহণযোগ্য বলে স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, কোম্পানিটি গ্রাহকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ঘটনাদের সাথে জড়িতদেরকে দায়ী করে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
ইউএস এয়ারলাইন্স কৃষ্ণাঙ্গ যাত্রীদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি উপদেষ্টা গ্রুপ চালু করার পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধের উদ্যোগও নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
১৮ জুন কর্মচারীদের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে রবার্ট ইসম বলেছেন, "ফ্লাইটে যা ঘটেছে তা হতাশাজনক। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছি এবং আমাদের গ্রাহকদের কাছে ব্যর্থ হয়েছি।"
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছিল, ভুক্তভোগীরা ফ্লাইটে বসে ছিলেন এবং ফিনিক্স ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট তাদের প্রত্যেকের কাছে গিয়ে তাদের বাইরে যেতে বলেন।
তারা কিছুক্ষণের মধ্যেই টের পেয়েছিলেন যে ফ্লাইটে থাকা মোট ৮ জন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল কারণ "একজন সাদা পুরুষ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট একজন অজ্ঞাত যাত্রীর শরীরের গন্ধ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল।"
ভুক্তভোগীরা যখন ফ্লাইট থেকে নেমে অপেক্ষা করছিলেন তখন পাইলট যাত্রীদের ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছিলেন, 'শরীরের গন্ধ' সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ফ্লাইট বিলম্ব হয়েছে। বাদীরা দুর্গন্ধের অভিযোগকে মিথ্যা বলেছিলেন।
এর আগে ২০১৭ সালে এনএএসিপি নামে একটি নাগরিক অধিকার গ্রুপ আমেরিকান এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ এনে কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিদের এয়ারলাইনটির পরিষেবা ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছিল। পরবর্তীতে এয়ারলাইনটি নিজেদের পরিষেবায় পরিবর্তন এনেছে জানানোর পর সে অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়েছিল।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়