আফ্রিকার বাইরে বিপজ্জনক এমপক্স ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত
আফ্রিকা মহাদেশ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ছোঁয়াচে এমপক্স ভাইরাস এবার শনাক্ত হলো ইউরোপে। বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারির এক দিন পরই সুইডেনে প্রথম এমপক্স আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। সুইডেনের জনস্বাস্থ্য সংস্থা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। খবর বিবিসি'র।
সংস্থাটি জানিয়েছে, বর্তমানে এমপক্স ক্লেড ১-এর প্রাদুর্ভাব থাকা আফ্রিকার কোনো একটি অঞ্চলে ভ্রমণকালে ওই ব্যক্তি সংক্রমিত হয়েছিলেন। পূর্বে এই ভাইরাসটি মাঙ্কিপক্স নামেই পরিচিত ছিল।
দ্য আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের তথ্যমতে, চলতি বছরের শুরু থেকে জুলাই পর্যন্ত ভাইরাসটিতে প্রায় ১৪ হাজার ৫০০ মানুষ আক্রান্ত এবং কমপক্ষে ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মূলত কঙ্গো থেকেই এই রোগটি মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকার অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।
সুইডেনের জনস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান অলিভিয়া বলছেন, সংক্রামিত ব্যক্তি স্টকহোমে চিকিৎসার নিচ্ছেন। তবে সুইডেনে তিনি চিকিৎসা নেওয়ার মানেই এই নয় যে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর এ ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে।
ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল জানিয়েছে, সাধারণত সংক্রমণের ৬ থেকে ১৩ দিন পর জ্বর, মাথাব্যথা, ফুসকুড়ি বা ঘা এবং মাংসপেশিতে ব্যথার মাধ্যমে উপসর্গ দেখা দেয়।
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এমপক্স ছড়ায়। এটি সঙ্গম, ত্বকের সংস্পর্শ, কথা বলা বা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। এতে ফ্লুর মতো উপসর্গের পাশাপাশি পুঁজ ও ক্ষত সৃষ্টি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রভাব সামান্য দেখা গেলেও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ১০০ জনের মধ্যে গড়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেছেন, আফ্রিকা এবং এর বাইরে আরও দ্রুত এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই উদ্বেগজনক। এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আবশ্যক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুইডেনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে 'এমপক্স ক্লেড ১বি'র প্রথম নিশ্চিত হওয়া কেসটি নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
এমপক্সের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে; যথা: ক্লেড-১ এবং ক্লেড-২। ক্লেড ১ আবার দুটি ধরনের রয়েছে এবং সুইডিশ কেসটিকে ক্লেড ১-বি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে ক্লেড ২-এর তুলনামূলক মৃদু সংক্রমণ চলাকালে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজির সহযোগী অধ্যাপক ড. ব্রায়ান ফার্গুসন বলেন, ইউরোপ এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে সম্ভবত আরও সংক্রমণ ঘটতে পারে। কারণ বর্তমানে এমপক্সের ঘটনা বন্ধ করার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে আফ্রিকায় প্রাদুর্ভাবের তীব্রতা এবং বিস্তারের পরিপ্রেক্ষিতে এটি অবাক হওয়ার মতো নয়।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন