তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ইরানকে আগেই হামলার খবর জানিয়ে দিয়েছিল ইসরায়েল
ইরানে পালটা হামলার আগে ইসরায়েল দেশটির কাছে একটি বার্তা পাঠিয়ে আগে থেকেই হামলার পরিকল্পনা জানিয়ে দেয়; এবং হামলার পর ইরান যেন কোনো বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখায় সে ব্যাপারেও আগাম সতর্ক করে ইসরায়েল। বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত তিনটি সূত্রের বরাতে এই খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস।
সূত্রগুলো বলছে, ইসরায়েলের এই বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল উভয় দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান হামলার পাল্টাপাল্টি অবস্থা কমিয়ে আনা এবং বড় ধরনের যুদ্ধ এড়ানো।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে তিন দফায় ইসরায়েল ইরানে আকাশপথে হামলা চালায় বলে জানান মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। প্রথম দফার হামলায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্যবস্তু করা হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার হামলা পরিচালিত হয় মিসাইল ও ড্রোন ঘাঁটি এবং অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে।
ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের এই হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে এবং এতে 'সামান্য ক্ষয়ক্ষতি' হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, ইরানের ১ অক্টোবরের বড়সড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব হিসেবেই এই পালটা হামলা চালানো হয়েছে।
কয়েকটি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ইসরায়েল ইরানকে আগেই জানায় যে, তারা সাধারণভাবে কোথায় আক্রমণ করতে চলেছে এবং কোথায় করবে না। ইরানকে সতর্ক করে ইসরায়েল জানায়, যদি তারা প্রতিক্রিয়া জানায়, তবে আরও বড় ধরনের হামলা চালানো হবে। বিশেষত, ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনা ঘটলে সেই হামলা আরও তীব্র হতে পারে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি সাংবাদিকদের বলেন, যদি ইরান ইসরায়েলের হামলার পালটা আক্রমণ করে তবে ইসরায়েল বাধ্য হবে আরও বড় ধরনের জবাব দিতে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না, তবে ইরান পালটা হামলা করলে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য প্রস্তুত।
ইসরায়েলের হামলার আগে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ফেল্ডক্যাম্প ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে যুদ্ধ ও উত্তেজনা কমানোর বিষয়ে কথা বলেন। একটি সূত্র জানায়, ইসরায়েলের হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে ফেল্ডক্যাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, "এই অঞ্চলের উত্তেজনা কমানো প্রয়োজন। আমরা সকল পক্ষকে আহ্বান জানাই যেন আর সংঘাত বাড়ানো না হয়।"
মার্কিন কর্মকর্তারা আশা করছেন, ইরান পালটা প্রতিক্রিয়া জানালেও তা সীমিত থাকবে। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র শন স্যাভেট বলেছেন, "আমাদের লক্ষ্য হলো মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করা এবং উত্তেজনা কমানো। ইরানকে বলছি, তারা যেন ইসরায়েলের ওপর হামলা বন্ধ করে, যাতে সংঘাতটি এখানেই শেষ হয় এবং আর বড় আকার না ধারণ করে।"
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন