বুলডোজারের পরে: যেভাবে ধ্বংস হওয়া ঘরবাড়ির মাঝেই টিকে থাকার সংগ্রাম করছে ভারতীয় মুসলিমরা
শহীদ মালিক এমন একটি বাড়ির জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, যেটি এখন আর নেই। তিনি পেশায় হিসাবরক্ষক। দিল্লির দক্ষিণ-পশ্চিমের খারাক রিওয়ারা সাতবাড়ী এলাকায় তার নিজের এবং আরও ২০টিরও বেশি বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ন্যায়বিচার পেতে তিনি দুই বছর ধরে স্থানীয় আইনজীবীর সঙ্গে কাজ করছেন।
২০২২ সালের অক্টোবরে দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ডিডিএ) পূর্ব কোনো সমীক্ষা বা নোটিশ ছাড়াই এসব বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়।
পরে মালিক নিজের পক্ষে এবং রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলা দুটি এখনও শুনানির অপেক্ষায়।
মালিক বলেন, 'শুনানির তারিখ বার বার পেছানো হচ্ছে। আমরা আমাদের অভিযোগ উপস্থাপন করার সুযোগও পাইনি। তার প্রশ্ন- 'আমাদের আর কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে?'
মালিক কেবল তার বাড়িই হারাননি, বরং আরও অনেক কিছুই হারিয়েছেন। বাড়ির ধ্বংসাবশেষের দিকে ইশারা করে তিনি বলেন, 'বাড়ি ভেঙে ফেলার দুমাস আগে তার সন্তান জিয়ানের জন্ম হয়। জন্মগতভাবেই ওর হৃদরোগজনিত অসুখ ছিল। ঘর হারিয়ে বাইরে থাকার কারণে ঠান্ডায় জিয়ানের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়।'
একদিন জিয়ান অবিরাম কেঁদেই চলছিল। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। এর পরের ছয়দিন জিয়ানকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটে বেড়ান মালিক। শেষ পর্যন্ত শিশুটিকে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইএমএস)-এর পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়।
অক্টোবরের এক শীতের সকালে জিয়ানের বাবা-মা লক্ষ্য করেন, তাদের ছেলে ঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারছে না। তার শরীরও নীল হয়ে যাচ্ছে। একপর্যায়ে মারা যায় শিশুটি। পরিবারের কাছে সন্তানের এ মৃত্যুটি ছিল তাদের বাড়ি ভেঙে ফেলার সরাসরি পরিণতি।
মালিক বলেন, 'চিকিৎসকরা বলেছিলেন যে ধুলোর সংস্পর্শে থাকার কারণে শিশুটির জন্য শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে উঠেছিল।'
তিনি বলেন, 'জিয়ানের কথা মনে হলেই আমি ও আমার স্ত্রী শোকে কাতর হয়ে পড়ি। আমাদের কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। কর্তৃপক্ষ আমাদের বাড়ির সঙ্গে আমাদের ছেলেকেও কেড়ে নিয়েছে।'
'বুলডোজার বিচার'
শুধু মালিকই নন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার মতো শত শত ভারতীয় মুসলমানের বাড়ি আগাম নোটিশ ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এসব বাড়ি ভেঙে ফেলার জন্য আইনি কোনো নথিও ছিল না।
নগর কর্তৃপক্ষ বাড়ি ভাঙার উদ্দেশ্য হিসেবে প্রায়ই নগর উন্নয়ন, সৌন্দর্যবর্ধন বা 'অবৈধ দখল' উচ্ছেদ করার কথা বলে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভিন্নমতের কর্মী ও সমালোচকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রকাশ্যে তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংসের কথা বলা হয়, বিশেষ করে এমন রাজ্যগুলোতে যেগুলোয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতাসীন।
বুলডোজার দিয়ে ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কারণে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বুলডোজার বাবা (ড্যাডি বুলডোজার) উপাধি পেয়েছেন। অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বুলডোজার মামা হিসেবে পরিচিত। তাদের হাতে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই মুসলিম।
অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রটেকশন অব সিভিল রাইটসের আইনজীবী নাজমুস সাকিব বলেন, ''(ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে) 'অবৈধ নির্মাণ' সম্পর্কিত দাবিগুলো অসঙ্গত। আর বারবার একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে এটি করা হয়।''
তিনি আরও বলেন, 'এ পরিস্থিতিতে আমাদের জন্য ওই সম্প্রদায়কে বিচারিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আস্থা রাখার বিষয়টি বোঝানো কঠিন হয়ে পড়ে। এখানে সর্বত্র হতাশার অনুভূতি।'
২০২২ সালের জুনে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ (পূর্বে এলাহাবাদ নামে পরিচিত) শহর কর্তৃপক্ষ সমাজকর্মী ও সম্প্রদায় নেতা জাভেদ মোহাম্মদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়। তাকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অভিযুক্ত করা হয় এবং প্রয়াগরাজে ওই মাসে ঘটা সহিংসতার 'মাস্টারমাইন্ড' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আর এ সহিংসতা শুরু হয়েছিল বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মা কর্তৃক হযরত মুহাম্মাদকে (স.) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে।
সাকিব আলজাজিরাকে বলেন, বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করেছিল দ্য প্রয়াগরাজ ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি। অথচ এ সংস্থাটির কার্যালয় যে ভবনে অবস্থিত, সেই ভবনের অনুমোদিত মানচিত্রই তারা দেখাতে পারেনি।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও প্রয়াগরাজ ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি আলজাজিরার প্রশ্নের কোনো জবাব দেয়নি।
এভাবে বাড়ি ধ্বংসের ফলে ভুক্তভোগীদের জীবনে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে। ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়া পরিবারগুলো অস্থায়ী তাঁবুতে, আশপাশে কিংবা সম্পূর্ণ দূরবর্তী শহরে নতুন করে জীবন শুরু করতে বাধ্য হয়। এসব নতুন জায়গায় বিভিন্ন সমস্যা যেমন, পুষ্টি, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, স্যানিটেশন ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ইত্যাদির সংকট তাদের জীবনকে আরও কঠিন করে তোলে।
'আমরা কি আমাদের আগের জীবন ফিরে পাব?'
চলতি বছরের জুনে উত্তর প্রদেশের আকবর নগরে গুঁড়িয়ে দেওয়া এক হাজার ৬০০ বাড়ির মধ্যে সালমা বানোর বাড়িও ছিল। ওই সময় লক্ষ্মৌতে কুকরাইল রিভারফ্রন্ট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের জন্য এক হাজারেরও বেশি মুসলিম পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। বন তৈরির জন্য তাদের ধ্বংস করে দেওয়া বাড়ির জমিতে রোপণ করা হয় গাছে চারা।
সালমা বলেন, 'আমাদের পুরো পাড়া বুলডোজার দিয়ে ঘেরাও করা হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সবকিছু ধুলোয় পরিণত হয়ে গেল। পরের দুই-তিনদিন আমরা কিছুই খেতে পাইনি। এখন এই নতুন বাড়িতে আসার পরও প্রতিদিন চিন্তা হয় কতটা খাবো। কারণ, আমাদের আয় যথেষ্ট নয়।'
তিনি বলেন, 'আমার পাঁচটা সন্তান। আমি তাদের কীভাবে খাওয়াবো যখন আমার বাড়ি আর আমার পুরো পৃথিবী ভেঙে গেছে?'
পরে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে তাদের এলাকা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে বসন্ত কুঞ্জতে স্থানান্তর করা হয়।
ঘরবাড়ি ভাঙার ঘটনার বিষয়ে জানতে আলজাজিরার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও লাক্ষ্মৌ নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এতে সাড়া দেয়নি।
সালমা বলেন, 'আমি সবসময় চিন্তিত থাকি। আমার সন্তানরা সঠিক শিক্ষা পাবে না। তাদের স্কুল আমাদের পুরনো বাড়ির কাছে ছিল। এখন আমরা তাদের স্কুলের ফি বা স্কুলবাসের খরচও দিতে পারি না।'
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে নতুন যে জায়গায় বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তার জন্য সরকারকে তাদের কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
সালমা বলেন, 'আকবর নগরের তুলনায় এখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেক বেশি। মুদ্রাস্ফীতি আমাদের জীবন্ত খেয়ে ফেলছে। আমি অনুভব করি যে আমাদের ভবিষ্যৎ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।'
সালমার স্বামী মোহাম্মাদ ইসহাক জানান, বাড়ি ধ্বংসের কারণে তার পরিবারটিই ভেঙে গেছে। আগে বাবা-মা ও ভাই তার সঙ্গে থাকতেন। কিন্তু নতুন এই ছোট্ট ফ্ল্যাটে তাদের জন্য জায়গা নেই।
তিনি বলেন, 'আমি আমার চাকরিও হারিয়েছি। জীবিকা নির্বাহের জন্য ইসহাক ঋণ নিয়ে একটি অটোরিকশা কিনি। আমি জানি না কতদিন এভাবে চালিয়ে যেতে পারব। আমরা কি আমাদের পুরনো জীবন ফিরে পাব?'
স্বস্তি ও ট্রমা
সম্প্রতি কোনো ব্যক্তি ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া বুলডোজার দিয়ে তার ঘরবাড়ি বা সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়া যাবে না বলে রায় দেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
রায়ে আরও বলা হয়, সম্পত্তি ভেঙে ফেলার আগে অবশ্যই ওই সম্পত্তির ভোগদখলকারীকে অন্তত ১৫ দিনের নোটিশ দিতে হবে। এতে বাড়ি ভাঙার সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ থাকতে হবে। যদি ১৫ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি নোটিশের জবাব না দেন, তখন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারবে। এছাড়াও ওই ব্যক্তিকে অবশ্যই সরকারের এ আদেশ চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ দিতে হবে।
ভারতে চলমান ভূমি সংঘাত বিশ্লেষণ নিয়ে কাজ করা ডেটা-গবেষণা প্রকল্প ল্যান্ড কনফ্লিক্ট ওয়াচ-এর প্রতিষ্ঠাতা কুমার সম্ভভ বলেন, এ রায়টি হলো 'মহা স্বস্তি'।
তিনি সতর্ক করে বলেন, আদালতের রায়ে কেবল শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ধ্বংসের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে 'সরকারি জমিতে নির্মিত বাড়িগুলো' এ রায়ের বাইরেই রয়ে গেছে। যে কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়টি অব্যাহত থাকতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে ঘরবাড়ি বা সম্পত্তি ধ্বংসের একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব রয়েছে।
ভারতের বেঙ্গালুরু-ভিত্তিক মনোবিজ্ঞানী জুলেখা শাকুর রজনি আলজাজিরাকে বলেছেন, 'বাস্তুচ্যুতির একটি অপূরণীয় অনুভূতি রয়েছে। সামষ্টিক ট্রমার কারণে ব্যক্তিগত ট্রমা এখন আরও জটিল হচ্ছে এবং এটি সারাদেশে অনেক মুসলমানের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।'
'সহযোগিতার অভাবে মানুষ নিজেদের অবহেলিত বোধ করছে। তারা নিজের বাড়িতেও নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারছে না। ফলে তাদের বাস্তবতার অনুভূতি দিন দিন বিকৃত হচ্ছে। এটি মানুষের একাকীত্বের অনুভূতি তৈরি করতে পারে', যোগ করেন তিনি।
২০২২ সালের ১২ জুন প্রয়াগরাজে জাভেদ মোহাম্মদের বাড়িটি যখন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, তখন তিনি কারাবন্দী। তিনি কেবল এটা নিশ্চিত হতে চাইছিলেন যে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিরাপদে আছেন কি না।
জাভেদ বলেন, 'আমাদের কাছের অনেক মানুষ সাহায্য করতে অনিচ্ছুক ছিল। তারা ভীত ছিলেন।'
তিনি বলেন, 'আমার মনে হয় তারা এ কারণে ভয় করেছিলেন যে যদি আমাদের সাহায্য করেন, তবে তাদের বাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। আমাদের সাথে যা ঘটেছে, তা বেআইনি ও স্বেচ্ছাচারী ছিল। আমরা তখন নিজেদের খুব একা অনুভব করতাম।'
কয়েক মাস সংগ্রামের পর জাভেদের পরিবার প্রয়াগরাজে একটি ভাড়া বাসা খুঁজে পায়। কিন্তু তাদের কাছে ভাড়া দেওয়ার কারণে বাড়িওয়ালাকে প্রায়ই স্থানীয় পুলিশের কাছে হয়রানির শিকার হতে হয়। এ ঘটনার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও জাভেদ এখনও তার সামাজিক সম্পর্কগুলো পুরোপুরি গুছিয়ে নিতে পারেননি।
তিনি বলেন, 'আমি আমার শহরে বেশ পরিচিত ছিলাম এবং অনেক ব্যক্তি ও সংস্থার সাথে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর তারা সবাই ভয় পেয়েছে। অনেক মানুষের সঙ্গে আমার প্রতিদিন দেখা হতো। কিন্তু এখন তারা আমার সঙ্গে দেখা করেন না, ফোনেও কথা বলেন না। আমার সামাজিক জীবন আর আগের মতো নেই। আমি এখনও একাকীত্ব অনুভব করি।'
দীর্ঘমেয়াদি বিপর্যয়
বিশ্লেষকরা বলছেন, বারবার বুলডোজার দিয়ে ঘরবাড়ি বা সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ভারতের মুসলমানদের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ হিসেবে কাজ করে।
রজনি ব্যাখ্যা করেন, 'চিকিৎসা শুরু করতে হলে আগে সহিংসতা বন্ধ হতে হবে। আমরা পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারের (পিটিএসডি) জটিল ঘটনাগুলো বাড়তে দেখছি, যেখানে মানুষ বারবার অতীতের স্মৃতি, চিন্তা ও দুঃস্বপ্নে ভুগছে। আর এটি তাদের ক্ষতি থেকে বেরিয়ে আসা আরও কঠিন করে তোলে।'
সশস্ত্র কট্টরপন্থী হিন্দুদের মিছিলের বিরুদ্ধে সহিংসতায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে ২০২৩ সালের আগস্টে হরিয়ানার নুহ শহরে কর্তৃপক্ষ এক হাজারেরও বেশি মুসিলম ঘরবাড়ি, কুটির ও ক্ষুদ্র ব্যবসা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনায় সাদ্দাম আলী (ছদ্মনাম) তার বাড়ি ও মেডিকেল স্টোর হারান। তিনি আলজাজিরাকে বলেন, 'আমাদের ধারণা ছিল না যে এটি হতে পারে। আমি আবার আমার বাড়ি তৈরির চেষ্টা করছি। কিন্তু আমি আমার ছেলের বিষণ্নতায় ডুবে যাওয়া সহ্য করতে পারছি না। এখন ও বিষণ্নতা দূরকারী ওষুধের ওপর নির্ভরশীল।
তিনি বলেন, 'যেগুলো সে (ছেলে) এত কঠোর পরিশ্রমে তৈরি করেছিল, সেটা কয়েক মিনিটের মধ্যে চোখের সামনে হারিয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা তার পক্ষে সহ্য করা সত্যিই খুবই কঠিন ছিল।'
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক