‘পরিবেশবান্ধব’ প্লাস্টিক আবিষ্কার, মিশে যাবে সমুদ্রের পানিতে, অবশিষ্ট রাখবে না কোনো মাইক্রোপ্লাস্টিক
খাবারের প্যাকেট কিংবা পানীয়ের বোতল—একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
কিন্তু প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য বড় সমস্যা এই প্লাস্টিক।
প্রতি বছর কোটি কোটি টন প্লাস্টিকের শেষ ঠিকানা হয় সমুদ্রে। এসব প্লাস্টিকের বেশিরভাগই 'বায়োডিগ্রেডেবল' নয়। অর্থাৎ এ প্লাস্টিক কাগজ বা খাবারের মতো স্বাভাবিকভাবে একসময় পচে মাটির সঙ্গে মিশে যায় না, বরং শত শত বছর ধরে পরিবেশে টিকে থাকে বহাল তবিয়তে।
আর পানির বোতলের মতো বড় প্লাস্টিক যখন ভেঙে ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়, সেগুলোকে বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক। এগুলো সহজেই বন্যপ্রাণীদের পেটে চলে যায়।
বিজ্ঞানী ও উৎপাদনকারীরা দীর্ঘদিন ধরেই প্রচলিত প্লাস্টিকের পরিবেশবান্ধব বিকল্প খুঁজছেন। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এবার জাপানের গবেষকরা এমন এক প্লাস্টিক তৈরির দাবি করেছেন, যা সমুদ্রের পানিতে সম্পূর্ণ মিশে যাবে।
বেশ কিছু পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক থাকলেও সেগুলো সমুদ্রের পানিতে সহজে দ্রবীভূত হয় না। আদতে কিছু প্লাস্টিক বর্জ্য আছে যেগুলো ৫০০ বছর পেরিয়ে গেলেও টিকে থাকে বহাল তবিয়তে, একটুও ভাঙে না।
এই সমস্যার সমাধানে জাপানের রিকেন রিসার্চ ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা এমন একটি প্লাস্টিক তৈরি করেছেন, যা শক্ত থাকবে, তবে মাটি এবং সমুদ্রের পানিতে পুরোপুরি মিশে যাবে। এই প্লাস্টিক কোনো মাইক্রোপ্লাস্টিকও রেখে যাবে না।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, লবণপানিতে রাখার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন প্লাস্টিকটি ভাঙতে শুরু করে।
মাটিতে রাখলে এ প্লাস্টিক মাত্র ১০ দিনের মধ্যে পচে গিয়ে এমন একটি রাসায়নিক উপাদান তৈরি করে, যা সার হিসেবে মাটিকে উর্বর রাখতে সাহায্য করে।
এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া বিজ্ঞানী তাকুজো আইদা বলেন: 'এই নতুন উপাদান দিয়ে আমরা এমন এক ধরনের প্লাস্টিক বানিয়েছি, যা শক্তিশালী, স্থিতিশীল, পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং নানা কাজে ব্যবহারের উপযোগী। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি কোনো মাইক্রোপ্লাস্টিক তৈরি করে না।'